পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ථූ6:9 গল্পগুচ্ছ পত্রযজ্ঞ বৈদ্যনাথ গ্রামের মধ্যে বিজ্ঞ ছিলেন সেইজন্য তিনি ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি রাখিয়া বতমানের সমস্ত কাজ করিতেন। যখন বিবাহ করিলেন তখন তিনি বর্তমান নববধরে অপেক্ষা ভাবী নবকুমারের মুখ সপষ্টতররপে দেখিতে পাইয়াছিলেন। শুভদটির সময় এতটা দরদস্টি প্রায় দেখা যায় না। তিনি পাকা লোক ছিলেন, সেইজন্য প্রেমের চেয়ে পিন্ডটাকেই অধিক বুঝিতেন এবং পত্রাথে ক্লিয়তে ভাযা এই মমে'ই তিনি বিনোদিনীকে বিবাহ করিয়াছিলেন । কিন্তু এ সংসারে বিজ্ঞলোকও ঠকে। যৌবনপ্রাপ্ত হইয়াও যখন বিনোদিনী তাহাব সব প্রধান কতব্যটি পালন করিল না তখন পন্নোম নরকের বার খোলা দেখিযা বৈদ্যনাথ বড়ো চিন্তিত হইলেন। মৃত্যুর পরে তাঁহার বিপুল ঐশ্বৰ্যই বা কে ভোগ করিবে এই ভাবনায় মৃত্যুর পশ্চাবে তিনি সেই ঐশ্বয ভোগ করিতে একপ্রকাব বিমুখ হইলেন । পবেই বলিয়াছি বৰ্তমানের অপেক্ষা ভবিষ্যৎটাকেই তিনি সত্য বলিযা জানিতেন । কিন্তু যাবতী বিনোদিনীর নিকট হঠাৎ এতটা প্রাজ্ঞতা প্রত্যাশা করা যায় না । সে বেচারার দমীলা বৰ্তমান, তাহার নববিকশিত যৌবন, বিনা প্রেমে বিফলে অতিবাহিত হইয়া যায় এইটেই তাহার পক্ষে সবচেয়ে শোচনীয় ছিল। পারলৌকিক পিণ্ডের ক্ষুধাটা সে ইহলৌকিক চিত্তক্ষধোদাহে একেবারেই ভুলিয়া বসিয়ছিল, মনসুর পবিত্র বিধান এবং বৈদ্যনাথের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যায তাহাব বনভূক্ষিত হৃদযেব তিলমiz তৃপিত হইল না। যে যাহাই বলকে এই বযসটাতে ভালোবাসা দেওয় এবং ভালোবাসা পাওয়াই রমণীর সকল সুখ এবং সকল কতবোর চেয়ে সবভাবতই বেশি মনে হয় । কিন্তু বিনোদব ভাগ্যে নবপ্রেমের বর্ষাবারিসিঞ্চনর বদলে স্বামীর, পিস শাশুড়ীর এবং অন্যান্য গরে ও গরে্তর লোকের সমচে আকাশ হইতে তজ্ঞান-গজানের শিলাবটি ব্যবস্থা হইল। সকলেই তাহাকে বন্ধ্যা বলিযা অপরাধী করত। একটা ফুলের চারাকে আলোক এবং বাতাস হইতে রন্ধঘরে রাখিলে তাহার যেরপে অবস্থা হয়, বিনোদর বঞ্চিত যৌবনেরও সেইরুপ অবস্থা ঘটিয়াছিল। সদাসবাদা এই-সকল চাপাচুপি ও বকারকির মধ্যে থাকিতে ন পরিষা যখন সে কুসুমের বাড়ি তাস খেলিতে যাইত সেই সময়টা তাহার বড়ো ভালো লাগিত । সেখানে পংনরকের ভীষণ ছায়া সবাদা বতর্তমান না থাকাতে হাসি-ঠাট্ট গল্পের কোনো বাধা छ्ठिन मा । কুসম যেদিন তাস খেলিবার সাথী না পাইত সেদিন তাহার তরণ দেবর নগেন্দ্রকে ধরিয়া আনিত। নগেন্দ্র ও বিনোদার আপত্তি হাসিয়া উড়াইয়া দিত। এ সংসারে এক হইতে আর হয় এবং খেলা ক্ৰমে সংকটে পরিণত হইতে পারে এ-সব গারতের কথা অল্পবয়সে হঠাৎ বিশ্বাস হয় না। এ সম্বন্ধে নগেন্দ্রেরও আপত্তির দঢ়তা কিছমাহ দেখা গেল না, এখন আর সে তাস খেলিবার জন্য অধিক পীড়াপীড়ির অপেক্ষা করিতে পারে না। এইরপে বিনোদার সহিত নগেন্দ্রের প্রায়ই দেখাসাক্ষাং হইতে লাগিল।