পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ふミ গল্পগুচ্ছ काम्नाक्किठाञ ।” বলিতে না বলিতে কালেক্টরের চাপরাস-পরা জনছয়েক পেয়াদা আসিয়া উপস্থিত। সেলাম করিয়া হাস্যমন্খে নীরবে দাঁড়াইয়া রহিল। লাবণ্য হাসিয়া কহিল, “তুমি কনগ্রেসে চাঁদা দিয়াছ বলিয়া তোমাকে গ্রেফতার বাবসোহেব।” নীলরতন পাশের ঘর হইতে বাহির হইয়া বিরক্তস্বরে কহিলেন, “কিসের বকশিশ!" পেয়াদারা বিকশিতদন্তে কহিল, “ম্যাজিস্ট্রেট-সাহেবের সহিত দেখা করিতে গিয়াছিলেন, তাহার বকশিশ ।” লাবণ্য হাসিয়া কহিল, “ম্যাজিস্ট্রেট-সাহেব আজকাল গোলাপজল বিক্ৰি ধরিয়াছেন নাকি। এমন অত্যন্ত ঠান্ডা ব্যবসায় তো তাঁহার পাবে ছিল না।” হতভাগ্য নবেন্দ গোলাপজলের সহিত ম্যাজিস্টেট-দর্শনের সামঞ্জস্য সাধন করিতে গিয়া কী ষে আবোলতাবোল বলিল তাহা কেহ বুঝিতে পারিল না। নীলরতন কহিল, "বকশিশের কোনো কাজ হয় নাই। বকশিশ নাহি মিলেগা।” নবেন্দ সংকুচিতভাবে পকেট হইতে একটা নোট বাহির করিয়া কহিল, “উহারা গরিব মানুষ, কিছ দিতে দোষ কী।" নীলরতন নবেন্দর হাত হইতে নোট টানিয়া লইয়া কহিল, “উহাদের অপেক্ষা গরিব মানুষ জগতে আছে, আমি তাহাদিগকে দিব।” রাষ্ট মহেশ্বরের ভূতপ্রেতগণকেও কিঞ্চিং ঠাণ্ডা করিবাব সুযোগ না পাইয়া নবেন্দ অত্যন্ত ফাঁপরে পড়িয়া গেল। পেয়াদাগণ যখন বজ্রদটি নিক্ষেপ করিয়া গমনোদ্যত হইল, তখন নবেন্দ একান্ত করণভাবে তাহাদের দিকে চাহিলেন ; নীরবে নিবেদন করিলেন, “বাবাসকল, আমার কোনো দোষ নাই, তোমরা তো জান!” কলিকাতায় কনগ্রেসের অধিবেশন। তদুপলক্ষে নীলরতন সমীক রাজধানীতে উপস্থিত হইলেন। নবেন্দও তাঁহাদের সঙ্গে ফিরিল। কলিকাতায় পদাপণ করিবামাত্র কনগ্রেসের দলবল নবেন্দকে চতুদিকে ঘিরিয়া একটা প্রকাণ্ড তাণ্ডব শরে করিয়া দিল। সমান সমাদর স্তুতিবাদের সীমা রহিল না। সকলেই বলিল, “আপনাদের মতো নায়কগণ দেশের কাজে যোগ না দিলে দেশের উপায় নাই।” কথাটার যাথাথ্য নবেন্দ অস্বীকার করিতে পারিলেন না, এবং গোলেমালে হঠাৎ কখন দেশের একজন অধিনায়ক হইয়া উঠিলেন। কনগ্রেস-সভায় যখন পদাপণ করিলেন তখন সকলে মিলিয়া উঠিয়া দাঁড়াইয়া বিজাতীয় বিলাতি তারস্বরে হিপ হিপ হারে শব্দে তাঁহাকে উৎকট অভিবাদন করিল। আমাদের মাতৃভূমির কলমলে লঙ্গজায় রক্তিম হইয়া উঠিল। যথাকালে মহারানীর জন্মদিন আসিল, নবেন্দর রায়বাহাদর খেতাব নিকটসমাগত মরীচিকার মতো অন্তধৰ্শন করিল। সেইদিন সায়াহে লাবণ্যলেখা সমারোহে নবেন্দকে নিমন্ণপবেক তাঁহাকে নববঙ্গে ভূষিত করিয়া স্বহস্তে তাঁহার ললাটে রক্তচন্দনের তিলক এবং প্রত্যেক শালী তাঁহার কণ্ঠে একগাছি করিয়া স্বরচিত পাপমালা পরাইয়া দিল। অরগাস্বরবসনা অরশলেখা