পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8O 。 গল্পগুচ্ছ ঝিক'ঝিকা করিতেছে। কঙ্কাল নদীতে নামিল, অনবতী ফণিভূষণও জলে পা দিল। জলপশ করিবামান্ত ফণিভূষণের তন্দ্রা ছটিয়া গেল। সম্মখে আর তাহার পথপ্রদশক নাই, কেবল নদীর পরপারে গাছগলা সন্তব্ধ হইয়া দাঁড়াইয়া এবং তাহাদের মাথার উপরে খণ্ড চদি শান্ত অবাকভাবে চাহিয়া আছে। আপাদমস্তক বারবার শিহরিয়া শিহরিয়া পখলিতপদে ফণিভূষণ ম্রোতের মধ্যে পড়িয়া গেল। যদিও সাঁতার জানিত কিন্তু স্নায় তাহার বশ মানিল না, সবশ্নের মধ্য হইতে কেবল মাহতমাত্র জাগরণের প্রান্তে আসিয়া পরক্ষণে অতলপশ সাপ্তির মধ্যে নিমগ্ন হইয়া গেল। গল্প শেষ করিয়া ইস্কুলমাস্টার খানিকক্ষণ থামিলেন। হঠাৎ থামিবামাত্র বোঝা গেল, তিনি ছাড়া ইতিমধ্যে জগতের আর-সকলই নীরব নিস্তবধ হইয়া গেছে। অনেকক্ষণ আমি একটি কথাও বলিলাম না এবং অন্ধকারে তিনি আমার মুখের ভাবও দেখিতে পাইলেন না। আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কি এ গল্প বিশ্বাস করিলেন না।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “আপনি কি ইহা বিশ্বাস করেন।" তিনি কহিলেন, “না। কেন করি না তাহার কয়েকটি যান্তি দিতেছি। প্রথমত প্রকৃতিঠাকুরানী উপন্যাসলেখিকা নহেন, তাঁহার হাতে বিস্তর কাজ আছে—” আমি কহিলাম, “দ্বিতীয়ত, আমারই নাম শ্ৰীযন্ত ফণিভূষণ সাহা।” ইস্কুলমাস্টার কিছমাত্র লজিত না হইয়া কহিলেন, “আমি তাহা হইলে ঠিকই অনুমান করিয়াছিলাম। আপনার সত্রীর নাম কী ছিল।" আমি কহিলাম, “নত্যকালী।” অগ্রহায়ণ ১৩o৫