পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩৯

8、ガ গল্পগুচ্ছ একদিন সামান্য কারণে বিষ উগীরিত হইয়া পড়িল। সাঁর কাছে পরমানন্দকে উল্লেখ করিয়া দশচরিত্র ভণ্ড বলিয়া গালি দিলেন এবং কহিলেন, "তোমার শালগ্রাম স্পশ করিয়া শপথপবেক বলো দেখি, সেই বকধামিককে তুমি মনে-মনে ভালোবাস 环T4” দলিত ফণিনীর ন্যায় মহতের মধ্যেই উদগ্র হইয়া মিথ্যা পধা স্বারা স্বামীকে বিন্ধ করিয়া গৌরী রাধকণ্ঠে কহিল, "ভালোবাসি, তুমি কী করিতে চাও করো।” পরেশ তৎক্ষণাৎ ঘরে তালাচাবি লাগাইয়া তাহাকে রন্ধ করিয়া আদালতে চলিয়া গেল। অসহ্য রোষে গৌরী কোনোমতে দ্বার উন্মোচন করাইয়া তৎক্ষণাৎ বাড়ি হইতে বাহির হইয়া গেল। পরমানন্দ নিভৃত ঘরে জনহীন মধ্যাহ্নে শাস্ত্রপাঠ করিতেছিলেন। হঠাৎ অমেঘবাহিনী বিদাল্লতার মতো গৌরী ব্রহমচারীর শাসাধ্যয়নের মাঝখানে আসিয়া ভাঙিয়া পড়িল । গর কহিলেন, “এ কী!” শিষ্য কহিল, "গরদেব, অপমানিত সংসার হইতে আমাকে উদ্ধার করিয়া লইয়া চলো, তোমার সেবাৱতে আমি জীবন উৎসগা করিব।” পরমানন্দ কঠোর ভৎসনা করিয়া গৌরীকে গহে ফিরিয়া পঠাইলেন। কিন্তু, হায় গরদেব, সেদিনকার সেই অকস্মাং ছিন্নবিচ্ছিন্ন অধায়নসত্র আর কি তেমন করিয়া জোড়া লাগিতে পারিল। পরেশ গহে আসিয়া মুক্তবার দেখিয়া সীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, "এখানে কে আসিয়াছিল।” সত্ৰী কহিল, “কেহ আসে নাই, আমি গরে দেবের গহে গিয়াছিলাম।” পরেশ মহন্তকাল পাংশ এবং পরক্ষণেই রক্তবর্ণ হইয়া কহিলেন, “কেন গিয়াছিলে।” গৌরী কহিল, “আমার খশি।" সেদিন হইতে পাহারা বসাইয়া সত্রীকে ঘরে রন্ধ করিয়া পরেশ এমনি উপল্লব আরম্ভ করিলেন যে, শহরময় কুৎসা রটিয়া গেল। এই-সকল কুৎসিত অপমান ও অত্যাচারের সংবাদে পরমানন্দের হরিচিতা দর হইয়া গেল। এই নগর অবিলবে পরিত্যাগ করা তিনি কতবা বোধ করিলেন, অথচ উৎপীড়িতকে ফেলিয়া কোনোমতেই দরে বাইতে পারিলেন না। সন্ন্যাসীর এই কয়দিনকার দিনরাত্রের ইতিহাস কেবল অন্তয"ম'ই জানেন। অবশেষে অবরোধের মধ্যে থাকিয়া গৌরী একদিন পর পাইল, “বংসে, আলোচনা করিয়া দেখিলাম, ইতিপবে অনেক সাধনী সাধকরমণ কৃষ্ণপ্রেমে সংসার ত্যাগ করিয়াছেন। যদি সংসারের অত্যাচারে হরিপাদপদ্ম হইতে তোমার চিত্ত বিক্ষিপ্ত হইয়া থাকে তবে জানাইলে ভগবানের সহায়তায় তাঁতার সেবিকাকে উদ্ধার করিয়া প্রভুর অভয় পদারবিন্দে উৎসগ করতে প্রয়াসী হইব। ২৬শে ফাগন বধবারে অপরাহ ১ ঘটিকার সময় ইচ্ছা করিলে তোমাদের পকারগাঁতীয়ে আমার সহিত সাক্ষাৎ হইতে পারিবে।” গৌরী পাখানি কেশে বধিয়া খোঁপার মধ্যে ঢাকিয়া রাখল। ২৬শে ফালান