পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88Հ গল্পগুচ্ছ যজ্ঞেশ্ববরের যজ্ঞ এক সময় যজ্ঞেশবরের অবস্থা ভালোই ছিল। এখন প্রাচীন ভাঙা কোঠাবাড়িটাকে সাপব্যাঙ-বাদাড়ের হতে সমপণ করিয়া খোড়ো ঘরে ভগবদ্গীতা লইয়া কালযাপন করিতেছেন। এগারো বৎসর পবে তাঁহার মেয়েটি যখন জমিয়াছিল তখন বংশের সৌভাগ্যশশী কৃষ্ণপক্ষের শেষ কলায় আসিয়া ঠেকিয়াছে। সেইজন্য সাধ করিয়া মেয়ের নাম রাখিয়াছিলেন কমলা। ভাবিয়াছিলেন, যদি এই কৌশলে ফাঁকি দিয়া চঞ্চলা লক্ষীকে কন্যারপে ঘরে ধরিয়া রাখিতে পারেন। লক্ষী সে ফন্দিতে ধরা দিলেন না, কিন্তু মেয়েটির মুখে নিজের শ্রী রাখিয়া গেলেন। বড়ো সন্দেরী মেয়ে। মেয়েটির বিবাহ সম্বন্ধে যজ্ঞেশ্বরের যে খুব উচ্চ আশা ছিল তাহা নহে। কাছাকাছি যে-কোনো একটি সৎপাত্রে বিবাহ দিতে তিনি প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তাঁহার জ্যাঠাইমা তাঁহার বড়ো আদরের কমলাকে বড়ো ঘর না হইলে দিবেন না, পণ করিয়া বসিয়া আছেন। তাঁহার নিজের হাতে অলপ-কিছু সংগতি ছিল, ভালো পাত্র পাইলে তাহা বাহির করিয়া দিবেন, সিথর করিয়াছেন । অবশেষে জ্যাঠাইমার উত্তেজনায় শাসাধ্যয়নগঞ্জিত শান্ত পল্লীগহ ছাড়িয়া যজ্ঞেশবর পাত্রসন্ধানে বাহির হইলেন। রাজশাহিতে তাঁহার এক আত্মীয়-উকিলের বাড়িতে গিয়া আশ্রয় লইলেন। এই উকিলের মক্কেল ছিলেন জমিদার গৌরসন্দর চৌধুরী। তাঁহার একমার পত্র বিভূতিভূষণ এই উকিলের অভিভাবকতায় কলেজে পড়াশনা করিত। ছেলেটি কখন ষে মেয়েটিকে আসিয়া দেখিয়াছিল তাহা ভগবান প্রজাপতিই জানিতেন । কিন্তু প্রজাপতির চক্ৰান্ত যজ্ঞেশ্বরের বুঝিবার সাধ্য ছিল না। তাই বিভূতি সম্বন্ধে তাঁহার মনে কোনোপ্রকার দরাশা পথান পায় নাই। নিরীহ যজ্ঞেশবরের অলপ আশা, অলপ সাহস ; বিভূতির মতো ছেলে যে তাঁহার জামাই হইতে পারে এ তাঁহার সম্পভব বলিয়া বোধ হইল না। উকিলের যত্নে একটি চলনসই পাত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাহার বধিসখি না থাক বিষয়-আশয় আছে। পাস একটিও দেয় নাই বটে কিন্তু কালেক্টরিতে ৩২৭৫ টাকা খাজনা দিয়া থাকে। পারের দল একদিন আসিয়া মেয়েটিকে পছন্দ করিয়া ক্ষীরের ছাঁচ, নারিকেলের মিস্টান্ন ও নাটোরের কাঁচাগোল্লা খাইয়া গেল। বিভূতি তাহার অনতিকাল পরে আসিয়া খবর শুনিলেন। যজ্ঞেশ্বর মনের আনন্দে তাঁহাকেও কাঁচাগোল্লা খাওয়াইতে উদ্যত হইলেন। কিন্তু ক্ষুধার অত্যন্ত অভাব জানাইয়া বিভূতি কিছু খাইল না। কাহারও সহিত ভালো করিয়া কথাই কহিল না, বাড়ি চলিয়া গেল। সেইদিনই সন্ধ্যাবেলায় উকিলবাব বিভূতির কাছ হইতে এক পত্র পাইলেন। | శా శా శా శా శా శా గా గాణా কে । উকিল ভাবিলেন, “এ তো বিষম মশকিলে পড়িলাম। গৌরসন্দরবাব ভাবিকেন