পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSö গল্পগুচ্ছ এ দিকে অন্তঃপরে মেয়ের দিদিমা অকল্যাণশঙ্কাসত্ত্বেও আশ্র সম্বরণ করিতে পারিলেন না। দেখিয়া মেয়ের চোখ দিয়া জল পড়িতে লাগিল। যজ্ঞেশবরের জ্যাঠাইমা আসিয়া বিভূতিকে কহিলেন, “ভাই, অপরাধ যা হইবার তা তো হইয়া গেছে, এখন মাপ করো, আজিকার মতো শুভকম সম্পন্ন হইতে দাও।” এ দিকে ছানার অন্যায় অপব্যয় দেখিয়া গোয়ালার দল রাগিয়া হাঙ্গামা করিতে উদ্যত। পাছে বরষাত্রদের সহিত তাহাদের একটা বিবাদ বাধিয়া যায় এই আশঙ্কায় যজ্ঞেশ্বর তাহাদিগকে ঠাণ্ডা করিবার জন্য বহন্তর চেষ্টা করিতে লাগিলেন। এমনসময় ভোজনশালায় অসময়ে বর আসিয়া উপস্থিত। বরযাত্ররা ভাবিল, বর বঝি রাগ করিয়া অতঃপর হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছেন; তাহাদের উৎসাহ বাড়িয়া উঠিল। বিভূতি রন্ধকণ্ঠে কহিলেন, “বাবা, আমাদের এ কীরকম ব্যবহার।" বলিয়া একটা ছানার থালা স্বহস্তে লইয়া তিনি পরিবেশনে প্রবত্ত হইলেন। গোয়ালাদিগকে বলিলেন, “তোমরা পশ্চাৎ দাঁড়াও, কাহারও ছানা যদি পাঁকে পড়ে তো সেগলো আবার পাতে তুলিয়া দিতে হইবে।” গৌরসন্দরের মুখের দিকে চাহিয়া দই-একজন উঠিবে কি না ইতস্তত করিতেছিল —বিভূতি কহিলেন, “বাবা, তুমিও বসিয়া যাও, অনেক রাত হইয়াছে।” গৌরসন্দর বসিয়া গেলেন। ছানা যথাস্থানে পৌছিতে লাগিল ।