পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ꮜ Ꮜ গল্পগুচ্ছ লাগিল। ভূপতি হাসিয়া কহিল, “ভাই, বাঁশের ফলও ধরে, কিন্তু কখন ধরে তার ঠিক নেই।” একদিন সন্ধ্যাবেলায় শোবার ঘরে বড়ো বাতি জৱালাইয়া ভূপতি প্রথমে লজায় একটা ইতস্তত করিল; পরে কহিল, "একটা কিছয় পড়ে শোনাব ?” চার কহিল, “শোনাও-না।” ভূপতি। কী শোনাব। চার্য। তোমার যা ইচ্ছে। ভূপতি চারীর অধিক আগ্রহ না দেখিয়া একট দমিল। তব সাহস করিয়া কহিল, “টেনিসন থেকে একটা-কিছু তজমা করে তোমাকে শোনাই।” চার কহিল, “শোনাও।” সমস্তই মাটি হইল। সংকোচ ও নিরুৎসাহে ভূপতির পড়া বাধিয়া যাইতে লাগিল, ঠিকমত বাংলা প্রতিশব্দ জোগাইল না। চারর শান্য দটি দেখিয়া বোঝা গেল, সে মন দিতেছে না। সেই দীপালোকিত ছোটো ঘরটি, সেই সন্ধ্যাবেলাকার নিভূত অবকাশটুকু তেমন করিয়া ভরিয়া উঠিল না। ভূপতি আরও দই-একবার এই ভ্ৰম করিয়া অবশেষে সীর সহিত সাহিত্যচর্চার চেস্টা পরিত্যাগ করিল। পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ যেমন গরতের আঘাতে স্নায় অবশ হইয়া যায় এবং প্রথমটা বেদনা টের পাওয়া যায় না, সেইরুপ বিচ্ছেদের আরম্ভকালে অমলের অভাব চার ভালো করিয়া যেন উপলব্ধি করিতে পারে নাই। অবশেষে যতই দিন যাইতে লাগিল ততই অমলের অভাবে সাংসারিক শান্যতার পরিমাপ ক্ৰমাগতই যেন বাড়িতে লাগিল। এই ভীষপ আবিকারে চার হতবুদ্ধি হইয়া গেছে। নিকুঞ্জবন হইতে বাহির হইয়া সে হঠাৎ এ কোন মরুভূমির মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছে—দিনের পর দিন যাইতেছে, মরপ্রোন্তর ক্ৰমাগতই বাড়িয়া চলিয়াছে। এ মরুভূমির কথা সে কিছুই জানিত না। ঘমে থেকে উঠিয়াই হঠাৎ বকের মধ্যে ধক করিয়া উঠে- মনে পড়ে, অমল নাই। সকালে যখন সে বারান্দায় পান সাজিতে বসে ক্ষণে ক্ষণে কেবলই মনে হয়, অমল পশ্চাৎ হইতে আসিবে না। এক-এক সময় অন্যমনস্ক হইয়া বেশি পান সাজিয়া ফেলে, সহসা মনে পড়ে, বেশি পান খাইবার লোক নাই। যখনই ভাঁড়ারঘরে পদাপণ করে মনে উদয় হয়, অমলের জন্য জলখাবার দিতে হইবে না। মনের অধৈষে অন্তঃপরের সীমান্তে আসিয়া তাহাকে সমরণ করাইয়া দেয়, অমল কলেজ হইতে আসিবে না। কোনো-একটা নতন বই, নতন লেখা, নতন খবর, নতন কৌতুক প্রত্যাশা করিবার নাই; কাহারও জন্য কোনো সেলাই করিবার, কোনো লেখা লিখিবার, কোনো শৌখিন छिर्गनन किनिग्ना ब्राथियाद्र नाटै । নিজের অসহ্য কন্টে ও চাঞ্চল্যে চার নিজে বিস্মিত। মনোবেদনার অবিশ্রাম পীড়নে তাহার ভয় হইল। নিজে কেবলই প্রশ্ন করিতে লাগিল, “কেন। এত কস্ট