পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫০

কম ফল &9:9 সে কি মাসির ঘর হতে ভয়ানক। তোমরা ঈশবরকে মা বলে ডাক', তিনি যদি তোমাদের মতো মা হন তবে তাঁর আদর চাই নে, তিনি যেন আমাকে নরকে দেন। শশধর। আঃ, সতীশ চলো চলো— কী বকচ্ছ, থামো। এসো, বাইরে আমার ঘরে এসো । ষোড়শ পরিচ্ছেদ শশধর । সতীশ, একটা ঠাণ্ডা হও । তোমার প্রতি অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে, সে কি আমি জানি নে। তোমার মাসি রাগের মুখে কী বলেছেন, সে কি আমন করে মনে নিতে আছে। দেখো, গোড়ায় যা ভুল হয়েছে তা এখন যতটা সম্ভব প্রতিকার করা যাবে, তুমি নিশ্চিত থাকো। সতীশ । মেসোমশাই, প্রতিকারের আর কোনো সম্ভাবনা নেই। মাসিমার সঙ্গে আমার এখন যেরপে সম্পক দড়িয়েছে তাতে তোমার ঘরের অন্ন আমার গলা দিয়ে আর গলবে না। এতদিন তোমাদের যা খরচ করিয়েছি তা যদি শেষ কড়িটি পর্যন্ত শোধ করে না দিতে পারি, তবে আমার মরেও শান্তি নেই। প্রতিকার যদি কিছু থাকে তো সে আমার হাতে, তুমি কী প্রতিকার করবে। শশধর। না, শোনো সতীশ, একটা সিথর হও । তোমার যা কতব্য সে তুমি পরে ভেবে- তোমার সম্বন্ধে আমরা যে অন্যায় করেছি তার প্রায়শিচত্ত তো আমাকেই করতে হবে। দেখো, আমার বিষয়ের এক অংশ আমি তোমাকে লিখে দেব—সেটাকে তুমি দান মনে কোরো না, সে তোমার প্রাপ্য। আমি সমস্ত ঠিক করে রেখেছি—পরশন শুক্লবারে রেজেন্সী করে দেব। সতীশ । (শশধরের পায়ের ধলো লইয়া) মেসোমশায়, কী আর বলব—তোমার এই স্নেহে— শশধর । আচ্ছা, থাক থাক। ও-সব স্নেহ-ফেয়হ আমি কিছর বাকি নে, রসকষ আমার কিছুই নেই—যা কতব্য তা কোনো রকমে পালন করতেই হবে এই বাকি। সাড়ে আটটা বাজল, তুমি আজ কোরিন্থিয়ানে যাবে বলেছিলে, বাও । সতীশ, একটা কথা তোমাকে বলে রাখি, দানপত্ৰখানা আমি মিস্টার ভাদুড়িকে দিয়েই লিখিয়ে নিয়েছি। ভাবে বোধ হল, তিনি এই ব্যাপারে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হলেন—তোমার প্রতি যে তাঁর টান নেই এমন তো দেখা গেল না। এমন-কি, আমি চলে আসবার সময় তিনি আমাকে বললেন, সতীশ আজকাল আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসে না কেন । সতীশের প্রস্থান ওরে রামচরণ, তোর মা-ঠাকুরানীকে একবার ডেকে দে তো। সফুমারীর প্রবেশ সকুমারী। কী স্থির করলে। শশধর। একটা চমৎকার ল্যান ঠাউরেছি। সঙ্কুেমারী। তোমার প্ল্যান যত চমৎকার হবে সে আমি জানি। যা হোক, সতীশকে এ বাড়ি হতে বিদায় করেছ তো ? শশধর। তাই যদি না করব তবে আর পল্যান কিসের। আমি ঠিক করেছি, সতীশকে