পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& SO গল্পগুচ্ছ আমাদের তরফ-মানিকপর লিখে-পড়ে দেব— তা হলেই সে স্বচ্ছন্দে নিজের খরচ নিজে চালিয়ে আলাদা হয়ে থাকতে পারবে। তোমাকে আর বিরক্ত করবে না। সকুমারী। আহা, কী সন্দের শল্যানই ঠাউরেছ। সৌন্দযে আমি একেবারে মাধ! না না, তুমি অমন পাগলামি করতে পারবে না, আমি বলে দিলেম। শশধর। দেখো, এক সময়ে তো ওকেই সমস্ত সম্পত্তি দেবার কথা ছিল । সকুমারী। তখন তো আমার হরেন জন্মায় নি। তা ছাড়া তুমি কি ভাব, তোমার আর ছেলেপলে হবে না। শশধর। স্কু, ভেবে দেখো আমাদের অন্যায় হচ্ছে। মনেই কর-না কেন, তোমার দুই ছেলে। সকুমারী। সে আমি অতশত বুঝি নে। তুমি যদি এমন কাজ কর তবে আমি গলায় দড়ি দিয়ে মরব, এই আমি বলে গেলেম । সকুমারীর প্রস্থান। সতীশের প্রবেশ শশধর । কী সতীশ, থিয়েটারে গেলে না ? সতীশ । না মেসোমশাই, আজ আর থিয়েটার না। এই দেখো, দীঘকাল পরে মিস্টার ভাদড়ির কাছ হতে আমি নিমন্ত্রণ পেয়েছি। তোমার দানপত্রের ফল দেখো। সংসারের উপর আমার ধিক্কার জন্মে গেছে, মেসোমশায় । আমি তোমার সে তালকে নেব না। শশধর । কেন, সতীশ । সতীশ। আমি ছদ্মবেশে পথিবীর কোনো সুখভোগ করব না। আমার যদি নিজের কোনো মল্যে থাকে, তবে সেই মুল্য দিয়ে যতটুকু পাওয়া যায় ততটুকুই ভোগ করব, তার চেয়ে এক কানাকড়িও আমি বেশি চাই না। তা ছাড়া, তুমি যে আমাকে তোমার সম্পত্তির অংশ দিতে চাও, মাসিমার সন্মতি নিয়েছ তো ? শশধর । না, সে তিনি— অর্থাৎ, সে এক রকম করে হবে । হঠাৎ তিনি রাজি না হতে পারেন, কিন্তু-— সতীশ । তুমি তাঁকে বলেছ ? শশধর। হাঁ, বলেছি বইকি ! বিলক্ষণ । তাঁকে না বলেই কি আরসতীশ । তিনি রাজি হয়েছেন ? শশধর। তাকে ঠিক রাজি বলা যায় না বটে— কিন্তু ভালো করে বুঝিয়ে-- সতীশ । ব্যথা চেষ্টা, মেসোমশায়। তাঁর নারাজিতে তোমার সম্পত্তি নিতে চাই নে। তুমি তাঁকে বোলো, আজ পর্যন্ত তিনি আমাকে যে অন্ন খাইয়েছেন তা উপগার না করে আমি বাঁচব না। তাঁর সমস্ত ঋণ সদস্যন্ধ শোধ করে তবে আমি হফি ছাড়ব । শশধর। সে কিছই দরকার নেই, সতীশ– তোমাকে ববক কিছ নগদ টাকা গোপনে— সতীশ । না মেসোমশায়, আর ঋণ বাড়াব না। তোমার কাছে এখন কেবল আমার একটি অনুরোধ আছে। তোমার যে সাহেব-বন্ধর আপিসে আমাকে কাজ দিতে চেয়েছিলে, সেখানে আমার কাজ জটিয়ে দিতে হবে। শশধর। পারবে তো ? সতীশ। এর পরেও যদি না পারি তবে পনবার মাসিমার অন্ন খাওয়াই আমার উপযুক্ত শাসিত হবে।