পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কম ফল 6.86% নিয়ে তোমরা আমাকে যেমন গ্রহণ করেছ সংসারকে আমি যেন তেমনি করে গ্রহণ করি। বিধ। বাবা, কী আর বলব। মা হয়ে আমি তোকে কেবল নেহই করেছি, তোর কোনো ভালো করতে পারি নি—ভগবান তোর ভালো করন। দিদির কাছে আমি একবার তোর হয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করে নিই গে। প্রস্থান শশধর। তবে এসো সতীশ, আমার ঘরে আজ আহার করে যেতে হবে। দুতপদে নলিনীর প্রবেশ নলিনী। সতীশ ! সতীশ । কণী, নলিনী। নলিনী। এর মানে কী। এ চিঠি তুমি আমাকে কেন লিখেছ। সতীশ । মানে যেমন বুঝেছিলে সেইটেই ঠিক। আমি তোমাকে প্রতারণা করে চিঠি লিখি নি। তবে আমার ভাগ্যক্রমে সকলই উলটা হয়। তুমি মনে করতে পার, তোমার দয়া উদ্রেক করবার জন্যই আমি— কিন্তু মেসোমশায় সাক্ষী আছেন, আমি অভিনয় করছিলেম না— তব যদি বিশ্বাস না হয প্রতিজ্ঞারক্ষা করবার এখনো সময় আছে । নলিনী। কী তুমি পাগলের মতো বকছ । আমি তোমার কী অপরাধ করেছি যে তুমি আমাকে এমন নিষ্ঠর ভাবে— সতীশ। যেজন্য আমি এই সংকল্প করেছি সে তুমি জান, নলিনী— আমি তো একবণও গোপন করি নি, তব কি আমার উপর তোমার শ্রদ্ধা আছে। নলিনী। শ্রদ্ধা ! সতীশ, তোমার উপর ওইজন্যই আমার রাগ ধরে। শ্রদ্ধা ! ছি ছি, শ্রদ্ধা তো পথিবীতে অনেকেই অনেককে করে। তুমি যে কাজ করেছ আমিও তই করেছি— তোমাতে আমাতে কোনো ভেদ রাখি নি। এই দেখো, আমার গহনাগলি সব এনেছি—এগুলি এখনো আমার সম্পত্তি নয়—এগুলি আমার বাপ-মায়ের। আমি তদিগকে না বলে এনেছি, এর কত দাম হতে পারে আমি কিছুই জানি নে; কিন্তু এ দিয়ে কি তোমার উদ্ধার হবে না। শশধর। উদ্ধার হবে, এই গহনাগুলির সঙ্গে আরও অমল্য ষে ধনটি দিয়েছ তা দিয়েই সতীশের উত্থার হবে। নলিনী। এই-যে শশধরবাব মাপ করবেন, তাড়াতাড়িতে আপনাকে আমি— শশধর। মা, সেজন্য লজা কী। দটির দোষ কেবল আমাদের মতো বড়োদেরই হয় না—তোমাদের বয়সে আমাদের মতো প্রবীণ লোক হঠাৎ চোখে ঠেকে না। সতীশ, তোমার আপিসের সাহেব এসেছেন দেখছি। আমি তাঁর সঙ্গো কথাবাত কয়ে আসি, ততক্ষণ তুমি আমার হয়ে অতিথিসৎকার করো – মা, এই পিস্তলটা এখন তোমার জিম্মাতেই থাকতে পারে। পৌষ ১৩১০