পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

歸。 嘯 সম্পত্তি-সম্পশ (;0 কিবা তাহার প্রপৌত্র কিবা তাহার বংশের কেহ আসে তবে তাহার কিবা তাছাদের হাতে এই সমস্ত টাকা গনিয়া দিতে হইবে।” বালক মনে করিল, যজ্ঞনাথ পাগল হইয়াছে। তৎক্ষণাৎ বাঁকার করিল, “আচ্ছা।" যজ্ঞনাথ কহিলেন, “তবে এই আসনে বইস ।” "কেন ।" “তোমার পঞ্জা হইবে।” "কেন ।” “এইরুপ নিয়ম।” বালক আসনে বসিল যজ্ঞনাথ তাহার কপালে চন্দন দিলেন, সিন্দরের টিপ দিয়া দিলেন, গলায় মালা দিলেন ; সম্মুখে বসিয়া বিড় বিড় করিয়া মন্ত্ৰ পড়িতে লাগিলেন । দেবতা হইয়া বসিয়া মন্ত শুনিতে নিতাইয়ের ভয় করিতে লাগিল; ডাকিল, “দাদা !" যজ্ঞনাথ কোনো উত্তর না করিয়া মন্ত্র পড়িয়া গেলেন । অবশেষে এক-একটি ঘড়া বহন কন্টে টানিয়া বালকের সম্মুখে পথাপিত করিয়া উৎসগা করিলেন এবং প্রত্যেকবার বলাইয়া লইলেন “যুধিষ্ঠির কুণ্ডের পত্র গদাধর কুণ্ড তস্য পত্র প্রাণকৃষ্ণ কুণ্ড তস্য পত্র পরমানন্দ কুণ্ড তস্য পত্র যজ্ঞনাথ কুণ্ড তস্য পত্র বন্দালন কুণ্ড তস্য পত্র গোকুলচন্দ্র কুণ্ডকে কিবা তাহর পত্র অথবা পৌত্র অথবা প্রপৌত্রকে কিবা তাহার লংশের ন্যায্য উত্তরাধিকারীকে এই সমস্ত টাকা গনিয়া দিব ।” এইরুপ বারবার আপত্তি করিতে করিতে ছেলেটা হতবুদ্ধির মতো হইয়া আসিল । তাহার জিহৰা ক্ৰমে জড়াইযা আসিল । যখন অনুষ্ঠান সমাপ্ত হইয়া গেল তখন দীপের ধর্ম ও উভয়ের নিশবাসপয়তে সেই ক্ষুদ্র গহর রাপাচ্ছন্ন হইয়া আসিল । বালকের তাল শকে হইয়া গেল, হাত-পা জয়লা করিতে লাগিল, শ্বাসরোধ হইবার উপক্ৰম হইল । প্রদীপ লান হইয়া হঠাৎ নিবিয়া গেল। অন্ধকারে বালক অনুভব করিল, যজ্ঞনাথ মই বাহিয়া উপরে উঠতেছে । ব্যাকুল হইয়া কহিল, "দাদা, কোথায় যাও।” যজ্ঞনাথ কহিলেন, “আমি চলিলাম। তুই এখানে থাক— তোকে আর কেহই খ:ক্তিয়া পাইবে না। কিন্তু মনে রাখিস, যজ্ঞনাথের পৌত্র বন্দাবনের পত্র গোকুলচন্দ্র।” বলিয়া উপরে উঠিয়াই মই তুলিয়া লইলেন। বালক রন্ধশ্বাস কন্ঠ হইতে বহর কন্টে বলিল, “দাদা, আমি বাবার কাছে যাব।” যজ্ঞনাথ ছিদ্রমুখে পাথর চাপা দিলেন এবং কান পাতিয়া শুনিলেন নিতাই আরএকবার রন্ধকণ্ঠে ডাকিল, “বাব!” তার পরে একটা পতনের শব্দ হইল, তার পরে আর কোনো শব্দ হইল না । যজ্ঞনাথ এইরুপে যক্ষের হস্তে ধন সমপণ করিয়া সেই প্রস্তরখণ্ডের উপর মাটি চাপা দিতে লাগিলেন। তাহার উপরে ভাঙা মন্দিরের ইট বালি মতপোকার করিলেন। তাহার উপর ঘাসের চাপড়া বসাইলেন, বনের গলেম রোপণ করিলেন। রাত্রি প্রায় শেষ হইয়া আসিল কিন্তু কিছুতেই সে স্থান হইতে নড়িতে পারিলেন না। থাকিয়া থাকিয়া কেবলই মাটিতে কান পাতিয়া শুনিতে লাগিলেন। মনে হইতে