পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ψ8 Ο গল্পগুচ্ছ সমস্ত বাড়ির, এমন-কি, সমস্ত পাড়ার এই আতঙ্ক আমার বকের মধ্যে পাথরের মতো চেপে বসল। সেদিনকার আকাশের যত আলো এবং জগতের সকল শক্তি যেন বারো বছরের একটি পাড়াগে’য়ে মেয়েকে দুইজন পরীক্ষকের দুইজোড়া চোখের সামনে শক্ত করে তুলে ধরবার জন্যে পেয়াদাগিরি করছিল— আমার কোথাও লকোবার জায়গা ছিল না। সমস্ত আকাশকে কাঁদিয়ে দিয়ে বাঁশি বাজতে লাগল--তোমাদের বাড়িতে এসে উঠলাম। আমার খ:ৎগলি সবিস্তারে খতিয়ে দেখেও গিন্নির দল সকলে স্বীকার করলেন, মোটের উপরে আমি সন্দেরী বটে। সে কথা শুনে আমার বড়ো জায়ের মখে গভীর হয়ে গেল। কিন্তু, আমার রপের দরকার কী ছিল তাই ভাবি। রংপজিনিসটাকে যদি কোনো সেকেলে পণ্ডিত গঙ্গামত্তিকা দিয়ে গড়তেন তা হলে ওর আদর থাকত ; কিন্তু, ওটা যে কেবল বিধাতা নিজের আনন্দে গড়েছেন, তাই তোমাদের ধমের সংসারে ওর দাম নেই। আমার যে রপে আছে সে কথা ভুলতে তোমার বেশিদিন লাগে নি। কিন্তু, আমার ষে বধি আছে সেটা তোমাদের পদে পদে স্মরণ করতে হয়েছে। ঐ বন্ধিটা আমার এতই সবাভাবিক যে তোমাদের ঘরকন্নার মধ্যে এতকাল কাটিয়েও আজও সে টিকে আছে। মা আমার এই বুদ্ধিটার জন্যে বিষম উদবিগম ছিলেন, মেয়েমানুষের পক্ষে এ এক বালাই। যাকে বাধা মেনে চলতে হবে সে যদি বন্ধিকে মেনে চলতে চায় তবে ঠোকর খেয়ে খেযে তাব কপাল ভাঙবেই। কিন্তু কী করব বলে। তোমাদের ঘরের বউয়ের যতটা বৃদ্ধির দরকাব বিধাতা অসতক হয়ে আমাকে তার চেযে অনেকটা বেশি দিয়ে ফেলেছেন, সে আমি এখন ফিরিয়ে দিই কাকে । তোমরা আমাকে মেয়ে-জ্যাঠা বলে দুবেল গাল দিয়েছ । কট কথাই হচ্ছে অক্ষমের সান্তুনা , অতএব সে আমি ক্ষমা করলাম। আমার একটা জিনিস তোমাদের ঘরকম বি লাইরে ছিল, সেটা কেউ তোমরা জন নি। আমি লুকিযে কবিতা লিখতুম। সে ছাইপশি যাই হোক-না, সেখানে তোমাদের অন্দরমহলের পচিল ওঠে নি। সেইখানে আমার মন্তি ; সেইখানে আমি আমি । আমার মধ্যে যা-কিছ তোমাদের মেজেবিউকে ছাড়িয়ে রয়েছে সে তোমরা পছন্দ কর নি, চিনতেও পার নি ; আমি যে কবি সে এই পনেরো বছরেও তোমাদের কাছে ধরা পড়ে নি। তোমাদের ঘরের প্রথম সমতির মধ্যে সবচেয়ে যেটা আমার মনে জাগছে সে তোমাদের গোয়ালঘর। অন্দরমহলের সিড়িতে ওঠবার ঠিক পাশের ঘরেই তোমাদের গোর থাকে, সামনের উঠোনটুকু ছাড়া তাদের আর নড়বার জায়গা নেই। সেই উঠোনের কোণে তাদের জাবনা দেবার কাঠের গামলা। সকালে বেহারার নানা কাজ : উপবাসী গোরগলে ততক্ষণ সেই গামলার ধারগুলো চেটে চেটে চিবিয়ে চিবিয়ে খাবলী করে দিত। আমার প্রাণ কাঁদত। আমি পাড়াগাঁয়ের মেয়ে—তোমাদের বাড়িতে যেদিন নতুন এলমে সেদিন সেই দটি গোর এবং তিনটি বাছরেই সমস্ত শহরের মধ্যে আমার চিরপরিচিত আত্মীরের মতো আমার চোখে ঠেকল। যতদিন নতুন বউ ছিলম নিজে না খেয়ে লুকিয়ে ওদের খাওয়াতুম ; যখন বড়ো হলাম তখন গেরির প্রতি আমার প্রকাশ্য মমতা লক্ষ্য করে আমার ঠাট্রার সম্পকী'য়েরা আমার গোত্র সম্প্রবন্ধে সন্দেহ