পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やQ げ গল্পগুচ্ছ ছোঢ়া, এতেই তার এত উৎসাহ ষে উপরি উপরি দ্বার সে এফ. এ. পরীক্ষায় ফেল করেও কিছমাত্র দমে যায় নি। তাকে আমি ডেকে বললাম, “বিন্দর খবর যাতে আমি পাই তোকে সেই বন্দোবস্ত করে দিতে হবে, শরৎ । বিন্দর আমাকে চিঠি লিখতে সাহস করবে না, লিখলেও আমি পাব না।” এরকম কাজের চেয়ে যদি তাকে বলতুম, বিন্দকে ডাকাতি করে আনতে কিবা তার পাগল স্বামীর মাথা ভেঙে দিতে তা হলে সে বেশি খুশি হত। শরতের সঙ্গে আলোচনা করছি এমন সময় তুমি ঘরে এসে বললে, “আবার কী হাঙ্গামা বাধিয়েছ।” আমি বললাম, "সেই যা সব-গোড়ায় বাধিয়েছিলাম, তোমাদের ঘরে এসেছিলাম —কিন্তু, সে তো তোমাদেরই কীতি ।” তুমি জিজ্ঞাসা করলে, “বিন্দকে আবার এনে কোথাও লুকিয়ে রেখেছ ?” আমি বললাম, “বিন্দ যদি আসত তা হলে নিশ্চয় এনে লুকিয়ে রাখতুম । কিন্তু সে আসবে না, তোমাদের ভয় নেই।” শরৎকে আমার কাছে দেখে তোমার সন্দেহ আরও বেড়ে উঠল। আমি জানতুম, শরৎ আমাদের বাড়ি যাতায়াত করে এ তোমরা কিছুতেই পছন্দ করতে না । তোমাদের ভয় ছিল, ওর পরে পলিসের দটি আছে— কোন দিন ও কোন রাজনৈতিক মামলায় পড়বে তখন তোমাদের সন্ধে জড়িয়ে ফেলবে । সেইজন্যে আমি ওকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিতুম, ঘরে ডাকতুম না। তোমার কাছে শুনলাম বিন্দ আবার পালিয়েছে, তাই তোমাদের বাড়িতে তার ভাসর খোঁজ করতে এসেছে। শুনে আমার বকের মধ্যে শেল বিধল । হতভাগিনীর ষে কী অসহ্য কষ্ট তা বুঝলাম, অথচ কিছুই করবার রাস্তা নেই। শরৎ খবর নিতে ছটল। সন্ধ্যার সময় ফিরে এসে আমাকে বললে “বিন্দ তার খড়ততো ভাইদের বাড়ি গিয়েছিল, কিন্তু তারা তুমলে রাগ করে তখনই আবার তাকে স্বশুরবাড়ি পৌছে দিয়ে গেছে। এর জন্যে তাদের খেসারত এবং গাড়িভাড়া দণ্ড যা ঘটেছে তার ঝাঁজ এখনো তাদের মন থেকে মরে নি।” তোমাদের খড়িমা শ্ৰীক্ষেত্রে তীর্থ করতে যাবেন বলে তোমাদের বাড়িতে এসে উঠেছেন । আমি তোমাদের বললাম, আমিও যাব। আমার হঠাৎ এমন ধমে মন হয়েছে দেখে তোমরা এত খুশি হয়ে উঠলে যে, কিছুমাত্র আপত্তি করলে না। এ কথাও মনে ছিল যে, এখন যদি কলকাতায় থাকি তবে আবার কোনদিন বিন্দকে নিয়ে ফ্যাসাদ বাধিয়ে বসব। আমাকে নিয়ে বিষম द्वनाठा । বধবারে আমার যাবার দিন, রবিবারে সমস্ত ঠিক হল। আমি শরৎকে ডেকে দিতে হবে।” শরতের মুখ প্রফুল্ল হয়ে উঠল; সে বললে, “ভয় নেই দিদি, আমি তাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে পরেী পর্যন্ত চলে যাব— ফাঁক দিয়ে জগন্নাথ দেখা হয়ে যাবে।” সেইদিন সন্ধ্যার সময় শরৎ আবার এল। তার মাখ দেখেই আমার বকে দয়ে গেল। আমি বললাম, “কণী শরৎ ? সুবিধা হল না বকি ?”