পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ げ গল্পগুচ্ছ বরং অনেক বিষয়ে এখানকার মানুষের প্রতি তাহার কিছু অন্যায় পক্ষপাত দেখা যায়। জলিখা যথাসাধ্য রাগ প্রকাশ করিয়া কহিল, "বাস্তবিক আমিনা, তোর ব্যবহারে আমি আশ্চর্য হইয়া গেছি। একজন বাহিরের যবেক আসিয়া তোকে সপশ করিতে পারে এতবড়ো তাহার সাহস !” আমিনা দিদির সহিত যোগ দিয়া কহিল, "দেখ দেখি বোন। যদি কোনো বাদশাহ কিবা নবাবের ছেলে এমন ব্যবহার করিত, তবে তাহাকে অপমান করিয়া দরে করিয়া দিতাম।” জলিখার ভিতরের হাসি আর বাধা মানিল না— হাসিয়া উঠিয়া কহিল, "সত্য করিয়া বল দেখি আমিনা, তুই ষে বলিতেছিলি পথিবীটা তোর বড়ো ভালো লাগিতেছে, সে কি ওই ববীর যবেকটার জন্য।" আমিনা কহিল, “তা, সত্য কথা বলি দিদি, ও আমার অনেক উপকার করে । ফুলটা ফলটা পাডিয়া দেয়, শিকার করিয়া আনে, একটা-কিছু কাজ করিতে ডাকিলে ছটিয়া আসে। অনেকবার মনে করি উহাকে শাসন করিব। কিন্তু সে চেস্টা ব্যথা। যদি খাব চোখ রাঙাইয়া বলি, দালিয়া, তোমার প্রতি আমি ভারি অসন্তুষ্ট হইয়াছি।-- দালিয়া মুখের দিকে চাহিয়া পরম কৌতুকে নিঃশব্দে হাসিতে থাকে। এদের দেশে পরিহাস বোধ কবি এইরকম : দা ঘা মারিলে ভারি খুশি হইয়া উঠে, তাহাও পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি। ওই দেখা-না, ঘরে পরিয়াছি— বড়ো আনন্দে আছে বার খলিলেই দেখিতে পাইব মুখ চক্ষ লাল করিয়া মনের সুখে আগনে ফ: দি:তছে । ইহাকে লইয়া কী করি বল তো বোন। আমি তো আর পাবিয়া উঠি না।” জলিখা কহিল, “আমি চেষ্টা দেখিতে পারি।” আমিনা হাসিয়া মিনতি করিয়া বলিল, “তোক দটি পাযে পড়ি বোন। ওকে আর তুই কিছু বলিস না।” এমন করিয়া বলিল, যেন ওই যুবকটি আমিনার একটি বড়ো সাধের পোষা হরিণ, এখনো তাহার বন্য স্বভাব দরে হয নাই -- পাছে অনা কোনো মানুষ দেখিলে ভয় পাইয়া নিরসন্দেশ হয়, এমন আশঙ্কা আছে। এমন সময় ধীবর আসিয়া কহিল, “আজ্ঞ দালিয়া আসে নাই, তিন্নি ?" “কোথায় গেল।” “সে বড়ো উপদ্রব করিতেছিল, তাই তাহাকে ওই ঘরে পরিমা রাখিয়াছি।” বন্ধ কিছ চিন্তান্বিত হইয়া কহিল, “যদি বিরক্ত করে সহিযা থাকিস। অলপ বয়সে অমন সকলেই দুরন্ত হইয়া থাকে। বেশি শাসন করিস না। দালিয়া কাল এক থল দিয়া আমার কাছে তিনটি মাছ লইয়াছিল।” আমিনা কহিল, “ভাবনা নাই বঢ়ো: আজ আমি তাহার কাছে দই থল আদায় করিয়া দিব, একটিও মাছ দিতে হইবে না।” বন্ধ তাহার পালিত কন্যার এত অলপ বয়সে এমন চাতুরী এবং বিষয়বধি দেখিয়া পরম প্রীত হইয়া তাহার মাথায় সনেহে হাত বলাইয়া চলিয়া গেল। • থল আথে বশ মন্দ্রা