পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●もげ . و gitcsrtisi নিজেকে যতই অপরাধী মনে করিত আমি ততই খুশি হইতাম। কড়া শাসনে মানুষের ভালো করিবার সংযোগ পাইলে, নিজে যে অনেক শাসনে ভালো হইয়াছি সেটার একটা দাম ফিরিয়া পাওয়া যায়। অন্যও আমাকে নিজের এবং পথিবীর অধিকাংশের তুলনায় অদ্ভুত ভালো বলিয়া জানিত। কমে বয়স বাড়িয়াছে, ইস্কুল হইতে কলেজে গিয়াছি। অখিলবাবর দীর মনে মনে ইচ্ছা ছিল, আমার মতো ভালো ছেলের সঙ্গে অনরে বিবাহ দেন। আমারও মনে এটা ছিল, কোনো কন্যার পিতার চোখ এড়াইবার মতো ছেলে আমি নই। কিন্তু একদিন শুনিলাম বি. এল. পাস-করা একটি টাটকা মনেসেফের সঙ্গে অনরে সম্ববন্ধ পাকা হইয়াছে। আমরা গরিব— আমি তো জানিতাম, সেটাতেই আমাদের দাম বাড়িয়াছে। কিন্তু, কন্যার পিতার হিসাবের প্রণালী স্বতন্ত্র। বিসজনের প্রতিমা ডুবিল। একেবারে জীবনের কোন আড়ালে সে পড়িয়া গেল । শিশুকাল হইতে যে আমার সকলের চেয়ে পরিচিত সে এক দিনের মধ্যেই এই হাজার-লক্ষ অপরিচিত মানুষের সমুদ্রের মধ্যে তলাইয়া গেল । সেদিন মনে যে কী বাজিল তাহা মনই জানে। কিন্তু, বিসজনের পরেও কি চিনিয়াছিলাম সে আমার দেবীর প্রতিমা ? তা নয়। অভিমান সেদিন ঘা থাইয়া আরও ঢেউ খেলাইয়া উঠিয়াছিল । অন্যকে তো চিরকাল ছোটো করিয়াই দেখিয়া আসিয়াছি; সেদিন আমার যোগ্যতার তুলনায় তাকে আরও ছোটো করিয়া দেখিলাম। আমার শ্রেষ্ঠতার যে পজা হইল না, সেদিন এইটেই সংসারে সকলের চেয়ে বড়ো অকল্যাণ বলিয়া জানিয়াছি। যাক, এটা বোঝা গেল, সংসারে শধ্যে সৎ হইয়া কোনো লাভ নাই। পণ করিলাম এমন টাকা করিব যে একদিন অখিলবাবকে বলিতে হইবে, বড়ো ঠকান ঠকিয়াছি । খবে কমিয়া কাজের লোক হইবার জোগাড় করিলাম। কাজের লোক হইবার সব চেয়ে বড়ো সরঞ্জাম নিজের পরে অগাধ বিশ্বাস : সে পক্ষে আমার কোনোদিন কোনো কমতি ছিল না । এ জিনিসটা ছোঁয়াচে । যে নিজেকে বিশ্বাস করে অধিকাংশ লোকেই তাকে বিশ্বাস করে। কেজো বন্ধিটা যে আমার স্বাভাবিক এবং অসাধারণ সেটা সকলেই মানিয়া লইতে লাগিল । কেজো সাহিত্যের বই এবং কাগজ্ঞে আমার শেলফ এবং টেবিল ভরিয়া উঠিল। বাড়ি-মেরামত ইলেকট্রিক আলো ও পাখার কৌশল, কোন জিনিসের কত দর, বাজারদর ওঠাপড়ার গঢ়তত্ত্ব, একসচেঞ্জের রহস্য, ল্যান, এস্টিমেট প্রভৃতি বিদ্যায় আসর জমাইবার মতো ওস্তাদি আমি একরকম মারিয়া লইয়াছিলাম । কিন্তু, অহরহ কাজের কথা বলি অথচ কিছুতে কোনো কাজেই নামি না, এমনভাবে অনেক দিন কাটিল । আমার ভক্তরা যখনই আমাকে কোনো-একটা স্বদেশী কোপানিতে যোগ দিবার প্রস্তাব করিত আমি বঝোইয়া দিতাম, যতগলা কারবার চলিতেছে কোনোটার কাজের ধারা বিশখে নহে, সকলেরই মধ্যে গলদ বিস্তর—তা ছাড়া, সততা বাঁচাইয়া চলিতে হইলে ওদের কাছে ঘোষবার জো নাই । সততার লাগামে একট-আধট ঢিল না দিলে ব্যাবসা চলে না, এমন কথা আমার কোনো বন্ধ বলাতে তার সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হইয়া গেছে। মৃত্যুকাল পর্যন্ত সবাঙ্গসন্দের শল্যান এস্টিমেট এবং প্রপেক্টস লিখিয়া আমার যশ অক্ষয় রাখতে পারতাম। কিন্তু, বিধির বিপাকে ল্যান করা ছাড়িয়া কাজ