পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やしf 。 * গল্পগুচ্ছ দেখিতে দেখিতে এমন জায়গায় আসিয়া পড়িলাম যেখানে তলও পাই না, কলও দেখি না। তখন হাল ছাড়িয়া দিয়া যদি সত্য খবরটা ফাঁস করি তবে সততা রক্ষা হয়, কিন্তু সততার খ্যাতি রক্ষা হয় না। গচ্ছিত টাকার সনদ জোগাইতে লাগিলাম, কিন্তু সেটা মনেফা হইতে নয়। কাজেই সদের হার বাড়াইয় গচ্ছিতের পরিমাণ বাড়াইতে থাকিলাম। . আমার বিবাহ অনেকদিন হইয়াছে। আমি জানিতাম, ঘরকন্না ছাড়া আমার সন্ত্রীর আর কোনো-কিছতেই খেয়াল নাই। হঠাৎ দেখি, অগস্তোর মতো এক গন্ডষে টাকার সমদ্র শষিয়া লইবার লোভ তারও আছে। আমি জানি না, কখন আমারই মনের মধ্য হইতে এই হাওয়াটা আমাদের সমস্ত পরিবারে বহিতে আরম্ভ করিয়াছে। আমাদের চাকর দাসী দারোয়ান পৰ্যন্ত আমাদের কারবারে টাকা ফেলিতেছে । আমার সত্ৰীও আমাকে ধরিয়া পড়িল, সে কিছু কিছু গহনা বেচিয়া আমার কারবারে টাকা খাটাইবে । আমি ভৎসনা করিলাম, উপদেশ দিলাম। বলিলাম, লোভের মতো রিপ নাই – সত্রীর টাকা লই নাই । আরও একজনের টাকা আমি লইতে পারি নাই । অন্য একটি ছেলে লইয়া বিধবা হইয়াছে। যেমন কৃপণ তেমনি ধনী বলিয়া তাব স্বামীর খ্যাতি ছিল । কেহ বলিত, দেড় লক্ষ টাকা তার জমা আছে , কেহ বলিত আরও অনেক বেশি। লোকে বলিত, কৃপণতায় অন্য তার স্বামীর সহধর্মিণী । আমি ভাবিতাম, তা হবেই তো। অন্য তো তেমন শিক্ষা এবং সঙ্গ পায় নাই । এই টাকা কিছু খাটাইয়া দিবার জন্য সে আমাকে অনুরোধ করিয়া পাঠাইয়ছিল। লোভ হইল, দরকারও খুব ছিল, কিন্তু ভয়ে তার সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করিতে গেলাম না । একবার যখন একটা বড়ো হয়ন্ডির মেয়াদ আসন্ন এমন সময়ে প্রসন্ন আসিয়া বলিল, “অখিলবাবরে মেয়ের টাকাটা এবার না লইলে নয়।” আমি বলিলাম, “যে রকম দশা সি’ধ কাটাও আমার বারা সম্ভব, কিন্তু ও টাকাটা লইতে পারিব না।” প্রসন্ন কহিল, “যখন হইতে তোমার ভরসা গেছে তখন হইতেই কারবারে লোকসান চলিতেছে। কপাল ঠাকিয়া লাগিলেই কপালের জোরও বাড়ে।” কিছুতেই রাজি হইলাম না। পরদিন প্রসল আসিয়া কহিল, "দক্ষিণ হইতে এক বিখ্যাত মারাঠি গগংকার আসিয়াছে, তাহার কাছে কুঠি লইয়া চলো।” সনাতন দত্তর বংশে কুঠি মিলাইয়া ভাগ্যপরীক্ষা দাব’লতার দিনে মানবপ্রকৃতির ভিতরকার সাবেক-কেলে ববরটা বল পাইয়া উঠে। যাহা দশট তাহা যখন ভয়ংকর তখন যাহা অদষ্ট তাহাকে বকে চাপিয়া ধরিতে ইচ্ছা করে। বৃদ্ধিকে বিশ্বাস করিয়া কোনো আরম পাইতেছিলাম না, তাই নিবন্ধিতার শরণ লইলাম: জন্মক্ষণ ও সন-তারিখ লইয়া গনাইতে গেলাম । শানিলাম, আমি সবনাশের শেষ কিনারায় আসিয়া দাঁড়াইয়াছি। কিন্তু, এইবার উদ্ধার করিয়া অতুল ঐশ্বয মিলাইয়া দিবেন।