পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やしたピ গল্পগুচ্ছ চলিলাম। দিনটা ছিল বহিস্পতিবার। এখন হতবন্ধির তাড়ায় বহিস্পতিবারকেও ভয় না করিয়া পারি না। যে মানুষ হতভাগা, নিজের বন্ধি ছাড়া আর-কিছনকেই না মানিতে তার ভরসা হয় না। যাবার বেলায় মনটা বড়ো খারাপ হইল। অনরে জর বাড়িয়াছে। দেখিলাম, সে বিছানায় শ্যইয়া। নীচে মেঝের উপর চুপ করিয়া বসিয়া সবোধ ইংরাজি ছবির কাগজ হইতে ছবি কাটিয়া আটা দিয়া একটা খাতায় অাঁটিতেছিল। বারবেলা বাঁচাইবার জন্য সময়ের অনেক আগে আসিয়াছিলাম। কথা ছিল, আমার স্ত্রীকেও সঙ্গে আনিব। কিন্তু, অনরে সবন্ধে আমার স্ত্রীর মনের কোণে বোধ করি একটুখানি ঈষা ছিল, তাই সে আসিবার সময় ছতা করিল, আমিও পীড়াপীড়ি করিলাম না। অন জিজ্ঞাসা করিল, “বউদিদি এলেন না ?” আমি বলিলাম, "শরীর ভালো নাই ।” অন্য একট নিশ্বাস ফেলিল, আর কিছু বলিল না। আমার মধ্যে একদিন যেটুকু মাধ্য দেখা দিয়াছিল সেইটিকে আপনার সোনার আলোয় গলাইয়া শরতের আকাশ সেই বোগাঁর বিছানার উপর বিছাইয়াছিল। কত কথা আজ উঠিয়া পড়িল। সেই-সব অনেক দিনের অতি ছোটো কথা আমার আসন্ন সবনাশকে ছাড়াইয়া আজ কত বড়ো হইয়া উঠিল। কারবারের হিসাব ভুলিযা গেলাম । ভাইফোঁটার খাওয়া খাইলাম। আমার কপালে সেই মরণের যাত্রী দীঘ"ায়কামনার ফোঁটা পরাইয়া আমার পায়ের ধলা লইল। আমি গোপনে চোখ মছিলাম । ঘরে আসিয়া বসিলে সে একটি টিনের বাক্স আমার কাছে আনিয়া রাখিল । বলিল, “সবোধের জন্য এই যা-কিছু এতদিন আগলাইয়া রাখিয়াছি তোমাকে দিলাম, আর সেই সঙ্গে সবোধকেও তোমার হাতে দিলাম। এখন নিশিচন্ত হইয়া মরিতে পারিব।” আমি বলিলাম, “অন দোহাই তোমার, টাকা আমি লইব না। সবোধের দেখাশনার কোনো ত্রুটি হইবে না, কিন্তু টাকা আর-কারও কাছে রাখিয়ো।” অন্য কহিল, “এই টাকা লইবার জন্য কত লোক হাত পাতিয়া লসিয়া আছে। তুমি কি তাদের হাতেই দিতে বল।” আমি চুপ করিয়া রহিলাম। অন্য বলিল, “একদিন আড়াল হইতে শুনিয়াছি, ডাক্তার বলিয়াছে সবোধের যেরকম শরীরের লক্ষণ ওর বেশিদিন বাঁচার আশা নাই । শুনিয়া অবধি ভয়ে ভয়ে আছি, পাছে আমার মরিতে দেরি হয়। আজ অন্তত আশা লইয়া মরিব যে, ডাক্তারের কথা ভুল হইতেও পারে। সাতচল্লিশ হাজার টাকা কোপানির কাগজে জমিয়াছে— আরও কিছু এ দিকে ও দিকে আছে। ঐ টাকা হইতে সবোধের পথ্য ও চিকিৎসা ভালো করিয়াই চলিতে পারবে। আর, যদি ভগবান অলপ বয়সেই উহাকে টানিয়া লন তবে এই টাকা উহার নামে একটা-কোনো ভালো কাজে লাগাইয়ো ।” আমি কহিলাম, “অন আমাকে তুমি যত বিশ্বাস কর আমি নিজেকে তত विव्वान कव्रि ना ।” শনিয়া আন একটমাত্র হাসিল। আমার মাখে এমন কথা মিথ্যা বিনয়ের মতো শোনায় ।