পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ Տ Ե` গল্পগুচ্ছ আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেন।” সে বলিল, “মাতু-আজ্ঞা।” কী সবনাশ। এ পক্ষেও মাতুল আছে নাকি । 嘯 তার পরে বঝিলাম, মাতৃভূমি আছে। সেই বিবাহ-ভাঙার পর হইতে কল্যাণী মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করিয়াছে। কিন্তু, আমি আশা ছাড়িতে পারিলাম না। সেই সরটি যে আমার হৃদয়ের মধ্যে আজও বাজিতেছে—সে যেন কোন ওপারের বাঁশি– আমার সংসারের বাহির হইতে আসিল—সমস্ত সংসারের বাহিরে ডাক দিল। আর, সেই-যে রাত্রির অন্ধকারের মধ্যে আমার কানে আসিয়াছিল ‘জায়গা আছে, সে যে আমার চিরজীবনের গানের ধয়া হইয়া রহিল। তখন আমার বয়স ছিল তেইশ, এখন হইয়াছে সাতাশ । এখনো আশা ছাড়ি নাই, কিন্তু মাতুলকে ছাড়িয়াছি। নিতান্ত এক ছেলে বলিয়া মা আমাকে ছাড়িতে পারেন নাই। তোমরা মনে করিতেছ, আমি বিবাহের আশা করি ? না, কোনো কালেই না । আমার মনে আছে, কেবল সেই এক রাত্রির অজানা কঠের মধর সরের আশা— জায়গা আছে। নিশ্চয়ই আছে। নইলে দাঁড়াব কোথায় । তাই বৎসরের পর বৎসর যায়— আমি এইখানেই আছি। দেখা হয়, সেই কন্ঠ শনি, যখন সুবিধা পাই কিছু তার কাজ করিয়া দিই— আর মন বলে, এই তো জায়গা পাইয়াছি। ওগো অপরিচিতা, তোমার পরিচয়ের শেষ হইল না, শেষ হইবে না; কিন্তু ভাগ্য আমার ভালো, এই তো আমি জায়গা পাইয়াছি। কাতিক ১৩২১