পয়লা নশবর 4C)· সে কোনো জবাব না দিয়ে মাথা হেলিয়ে জানালে যে, আছে। আমি বললাম, “তোমার হাতের তৈরি মাছের কচুরি আর বিলাতি আমড়ার চাটনি ওদের খুব ভালো লাগে, সেটা ভুলো না।” এই বলে বাইরে এসেই দেখি কানাইলাল বসে আছে। আমি বললাম, “কানাই, আজ তোমরা একটা সকাল-সকাল এসো।” কানাই আশ্চযা হয়ে বললে, “সে কী কথা। আজ আমাদের সভা হবে নাকি।” আমি বললাম, “হবে বই-কি। সমস্ত তৈরি আছে—ম্যাক্সিম গকির নতুন গল্পের বই, বেগ স’র উপর রাসেলের সমালোচনা, মাছের কচুরি, এমন-কি আমড়ার চাটনি পষ“চত ।” কানাই অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে চেয়ে রইল। খানিক বাদে বললে, “অদ্বৈতবাব, আমি বলি, আজ থাক।” অবশেষে প্রশ্ন করে জানতে পারলাম, আমার শ্যালক সরোজ কাল বিকেলবেলার আত্মহত্যা করে মরেছে। পরীক্ষায় সে পাস হতে পারে নি, তাই নিয়ে বিমাতার কাছ থেকে খাব গঞ্জনা পেয়েছিল— সইতে না পেরে গলায় চাদর বেধে মরেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “তুমি কোথা থেকে শনলে।” সে বললে, “পয়লা-নম্বর থেকে ৷” পয়লা-নম্বর থেকে ! বিবরণটা এই— সন্ধ্যার দিকে অনিলার কাছে যখন খবর এল তখন সে গাড়ি ডাকার অপেক্ষা না করে অযোধ্যাকে সঙ্গে নিয়ে পথের মধ্যে থেকে গাড়ি ভাড়া করে বাপের বাড়িতে গিয়েছিল। অযোধ্যার কাছ থেকে রাত্রে সিতাংশ মৌলি এই খবর পেয়েই তখনি সেখানে গিয়ে পলিসকে ঠাণ্ডা করে নিজে শমশানে উপস্থিত থেকে মতদেহের সৎকার করিয়ে দেন । ব্যতিব্যস্ত হয়ে তখনি অন্তঃপরে গেলাম। মনে করেছিলাম, অনিলা বুঝি দরজা বন্ধ করে আবার তার শোবার ঘরের আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু, এবারে গিয়ে দেখি, ভাঁড়ারের সামনের বরাদায় বসে সে আমড়ার চাটনির আয়োজন করছে। যখন লক্ষ করে তার মুখ দেখলাম তখন বুঝলাম, এক রাত্রে তার জীবনটা উলট-পালট হয়ে গেছে। আমি অভিযোগ করে বললাম, “আমাকে কিছু বল নি কেন।” সে তার বড়ো বড়ো দুই চোখ তুলে একবার আমার মাখের দিকে তাকালে— কোনো কথা কইলে না। আমি লক্তায় অত্যন্ত ছোটো হয়ে গেলাম। যদি অনিলা বলত তোমাকে বলে লাভ কী তা হলে আমার জবাব দেবার কিছুই থাকত না। জীবনের এই-সব বিপ্লব-সংসারের সখে দুঃখ— নিয়ে কী করে যে ব্যবহার করতে इग्न, उर्शाश कि उाद्र किझई छानि । আমি বললাম, “অনিল, এ-সব রাখো, আজ আমাদের সভা হবে না।” অনিলা আমড়ার খোসা ছাড়াবার দিকে দটি রেখে বললে, "কেন হবে না। খবে হবে। আমি এত করে সমস্ত আয়োজন করেছি, সে আমি নষ্ট হতে দিতে পারব না।” আমি বললাম, “আজ আমাদের সভার কাজ হওয়া অসম্ভব।” সে বললে, “তোমাদের সভা না হয় না হবে, আজ আমার নিমন্ত্রণ।” আমি মনে একট, আরাম পেলাম। ভাবলাম, অনিলের লোকটা তত বেশি কিছ:
পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।