পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পার ও পারী அர் q86 আছেন তিনি অধিকাংশ উমেদারকেই উপক্ৰমণিকায় আশবাস দেন কিন্তু উপসংহারে সেটা সংহরণ করেন। আমার পিতামহ যখন ডেপুটি ছিলেন তখন মরবির বাজার এমন কষা ছিল না, তাই তখন চাকরি থেকে পেনসন এবং পেনসন থেকে চাকরি একই বংশে খেয়া-পারাপারের মতো চলত। এখন দিন খারাপ, তাই বাবা যখন উদবিগ্ন হয়ে ভাবছিলেন যে তাঁর বংশধর গভমেণ্ট আপিসের উচ্চ খাঁচা থেকে সওদাগরি আপিসের নিম্ন দাঁড়ে অবতরণ করবে কি না, এমন সময় এক ধনী ব্রাহনলের একমাত্র কন্যা তাঁর নোটিশে এল। ব্লাহরণটি কনট্র্যাক্টর, তাঁর অর্থাগমের পথটি প্রকাশ্য ভূতলের চেয়ে আদশ্য রসাতলের দিক দিয়েই প্রশস্ত ছিল। তিনি সে সময়ে বড়োদিন উপলক্ষে কমলালেব ও অন্যান্য উপহারসামগ্রী যথাযোগ্য পাত্রে বিতরণ করতে ব্যস্ত ছিলেন, এমন সময়ে তাঁর পাড়ায় আমার অভু্যদয় হল। বাবার বাসা ছিল তাঁর বাড়ির সামনেই, মাঝে ছিল এক রাস্তা। বলা বাহুল্য, ডেপটির এম.এ.পাস-করা ছেলে কন্যাদায়িকের পক্ষে খাব প্রাংশ লভ্য ফল । এইজন্যে কনট্র্যাক্টরবাব আমার প্রতি উদবাহন হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর বাহৰ আধলিলন্বিত ছিল সে পরিচয় পাবেই দিয়েছি—অন্তত সে বাহ ডেপুটিবাবর হদয় পর্যন্ত অতি অনায়াসে পৌছল। কিন্তু, আমার হদয়টা তখন আরও অনেক উপরে ছিল । কারণ, আমার বয়স তখন কুড়ি পেরোয়-পেরোয়; তখন খটি দীরত্ন ছাড়া অন্য কোনো রয়ের প্রতি আমার লোভ ছিল না। শধে তাই নয়, তখনো ভাবকতার দীপ্তি আমার মনে উজ্জবল। অর্থাৎ, সহধমিশিী শব্দের যে অর্থ আমার মনে ছিল সে অর্থটা বাজারে চলিত ছিল না। বতমান কালে আমাদের দেশে সংসারটা চারি দিকেই সংকুচিত ; মননসাধনের বেলায় মনকে জ্ঞান ও ভাবের উদার ক্ষেত্রে ব্যাপ্ত করে রাখা আর ব্যবহারের বেলায় তাকে সেই সংসারের অতি ছোটো মাপে কৃশ করে আনা, এ আমি মনে মনেও সহ্য করতে পারতুম না। যে সন্ত্রীকে আইডিয়ালের পথে সঙ্গিনী করতে চাই সেই সী ঘরকন্নার গারদে পায়ের বেড়ি হয়ে থাকবে এবং প্রত্যেক চলাফেরায় ঝংকার দিয়ে পিছনে টেনে রাখবে, এমন দরগ্রহ আমি স্বীকার করে নিতে নারাজ ছিলাম। আসল কথা, আমাদের দেশের প্রহসনে যাদের আধুনিক বলে বিদ্রুপ করে, কলেজ থেকে টাটকা বেরিয়ে আমি সেইরকম নিরবচ্ছিন্ন আধুনিক হয়ে উঠেছিলাম। আমাদের কালে সেই আধুনিকের দল এখনকার চেয়ে অনেক বেশি ছিল। আশচয" এই যে, তারা সত্যই বিশ্ববাস করত যে, সমাজকে মেনে চলাই দগতি এবং তাকে টেনে চলাই উন্নতি। , এ-হেন আমি গ্রীষত্তে সনৎকুমার, একটি বলশালী কন্যাদারিকের টাকার থলির হা-করা মুখের সামনে এসে পড়লাম। বাবা বললেন, শুভস্য শীঘ্রম। আমি চুপ করে রইলাম ; মনে মনে ভাবলাম, একটা দেখে-শনে বকে-পড়ে নিই। চোখ কান খালে রাখলাম—কিছু পরিমাণ দেখা এবং অনেকটা পরিমাণ শোনা গেল। মেয়েটি পর্তুলের মতো ছোটো এবং সন্দের—সে যে স্বভাবের নিয়মে তৈরি হয়েছে তা তাকে দেখে মনে হয় না—কে যেন তার প্রত্যেক চুলটি পাট করে, তার ভূরাটি একে, তাকে হাতে করে গড়ে তুলেছে। সে সংস্কৃতভাষায় গঙ্গার স্তৰ আবৃত্তি করে পড়তে পারে। তার মা পাথরে কয়লা পৰ্যন্ত গঙ্গার জলে ধরে তবে রাঁধেন : জীবধাত্রী বসন্থেরা নানা জাতিকে ধারণ করেন বলে পথিবীর সংপশ সম্বন্ধে তিনি সবদাই সংকুচিত্ত: