পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংস্কার ꬃ õጭ কলতলায় স্নান সেরে সাফ কাপড় পরে ডান হাতে এক বালতি জল ও বগলে কাঁটা নিয়ে রাস্তা দিয়ে সে যাচ্ছিল। গায়ে চেক-কাটা মেরজাই, অচিড়ানো চুল ভিজে; বা হাত ধরে সঙ্গে চলেছিল আট-নয় বছরের এক নাতি। দজনকেই দেখতে সশ্রী, সঠোম দেহ। সেই ভিড়ে কারও সঙ্গে বা কিছর সঙ্গে তাদের ঠেকাঠেকি হয়ে থাকবে। তার থেকে এই নিরন্তর মারের সন্টি। নাতিটা কাঁদছে আর সকলকে অননয় করছে, “দাদাকে মেরো না।” বড়োটা হাত জোড় করে বলছে, “দেখতে পাই নি, বাঝতে পারি নি, কসর মাফ করো।” অহিংসাব্রত পশ্যার্থীদের রাগ চড়ে উঠছে। বড়োর ভীত চোখ দিয়ে জল পড়ছে, দাড়ি দিয়ে রক্ত । আমার আর সহ্য হয় না। ওদের সঙ্গে কলহ করতে নামা আমার পক্ষে অসম্ভব। স্থির করলাম, মেথরকে আমার নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে দেখাব আমি ধামিকদের দলে নই। চঞ্চলতা দেখে কলিকা আমার মনের ভাব বুঝতে পারলে। জোর করে আমার হাত চেপে ধরে বললে, “করছ কী । ও যে মেথর !" আমি বললাম, “হোক-না মেথর, তাই বলে ওকে অন্যায় মারবে ?” কলিকা বললে, “ওরই তো দোষ । রাস্তার মাঝখান দিয়ে যায় কেন । পাশ কাটিয়ে গেলে কি ওর মানহানি হত ।” আমি বললাম, “সে আমি বুঝি নে, ওকে আমি গাড়িতে তুলে নেবই।” কলিকা বললে, “তা হলে এখনি এখানে রাস্তায় নেমে যাব । মেথরকে গাড়িতে নিতে পারব না— হাড়িডোম হলেও বকেতুম, কিন্তু মেথর!” আমি বললাম, “দেখছ না স্নান করে ধোপ দেওয়া কাপড় পরেছে ? এদের অনেকের চেয়ে ও পরিকার।" “তা হোক-না, ও যে মেথর !" শোফারকে বললে, “গঙ্গাদীন, হকিয়ে চলে যাও।” আমারই হার হল । আমি কাপরাষ। নয়নমোহন সমাজতত্ত্বঘটিত গভীর যুক্তি বের করেছিল— সে আমার কানে পে’ছিল না, তার জবাবও দিই নি । प्राप्टाछ ১ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৫