পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やしf গল্পগুচ্ছ “শনিয়া তিনি ঈষৎ একটা নিশবাস ফেলিয়া বলিলেন, বিবাহ ব্যাপারটা কি এতই আনন্দের।” “শনিয়া আমি হাসিয়া অস্থির হইয়া গেলাম। এমন কথাও তো কখনো শুনি নাই। আমি বলিলাম, সে হইবে না, বাজনা চাই, আলো চাই।’ "দাদাকে এমনি ব্যস্ত করিয়া তুলিলাম যে, দাদা তখনই রীতিমত উৎসবের আয়োজনে প্রবত্ত হইলেন। "আমি কেবলই গল্প করিতে লাগিলাম, বধ ঘরে আসিলে কী হইবে, কী করিব। জিজ্ঞাসা করিলাম, আচ্ছা ডাক্তার-মহাশয়, তখনো কি আপনি রোগীর নাড়ী টিপিয়া বেড়াইবেন। “হি হি হি হি! যদিও মানুষের বিশেষত পরষের মনটা দণ্টিগোচর নয়, তব আমি শপথ করিয়া বলিতে পারি, কথাগুলি ডাক্তারের বকে শেলের মতো বাজিতেছিল। “অনেক রাত্রে লগ্ন। সন্ধ্যাবেলায় ডাক্তার ছাতের উপর বসিয়া দাদার সহিত দুইএক পাত্র মদ খাইতেছিলেন। দুইজনেরই এই অভ্যাসটুকু ছিল। ক্ৰমে আকাশে চাঁদ छेठिंढन । “আমি হাসিতে হাসিতে আসিয়া বলিলাম, ডাক্তার-মশায় ভুলিয়া গেলেন নাকি । যাত্রার যে সময় হইয়াছে।’ “এইখানে একটা সামান্য কথা বলা আবশ্যক । ইতিমধ্যে আমি গোপনে ডাক্তারখানায় গিয়া খানিকটা গড়া সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়াছিলাম এবং সেই গড়াল কিয়দংশ সুবিধামত অলক্ষিতে ডাক্তারের গলাসে মিশাইয়া দিয়াছিলাম। কোন গড়া খাইলে মানুষ মরে ডাক্তারের কাছে শিখিয়াছিলাম। “ডাক্তার এক চুমুকে লাসটি শেষ করিয়া কিঞ্চিং আদ্র গদগদ কন্ঠে আমার মুখের দিকে মমর্শতিক দণ্টিপাত করিয়া বলিলেন, তবে চলিলাম । “বাঁশি বাজিতে লাগিল। আমি একটি বারনেসাঁ শাডি পরিলাম ; যতগুলি গহনা সিন্দকে তোলা ছিল সবগুলি বাহির করিয়া পরিলাম : সিথিতে বড়ো করিয়া সিদর দিলাম। আমার সেই বকুলতলায় বিছানা পাতিলাম। “বড়ো সন্দের রাত্রি। ফটফটে জ্যোৎস্না। সপত জগতের ক্লান্তি হরণ করিয়া দক্ষিণে বাতাস বহিতেছে। জ:ই আর বেল ফসলের গন্ধে সমসত বাগান আমোদ করিয়াছে। “বাঁশির শব্দ যখন ক্ৰমে দরে চলিয়া গেল, জ্যোৎসনা যখন অন্ধকার হইয়া আসিতে লাগিল, এই তর-পল্লব এবং আকাশ এবং আজন্মকালের ঘরদায়ার লইয়া পপিবী যখন আমার চারি দিক হইতে মায়ার মতো মিলাইয়া যাইতে লাগিল, তখন আমি নেত্র নিমীলন করিয়া হাসিলাম । “ইচ্ছা ছিল, যখন লোকে আসিয়া আমাকে দেখিবে তখন এই হাসিটকু যেন রঙিন নেশার মতো আমার ঠোঁটের কাছে লাগিয়া থাকে। ইচ্ছা ছিল, যখন আমার অনন্তরাত্রির বাসর-ঘরে ধীরে ধীরে প্রবেশ করিব তখন এই হাসিটকু এখান হইতেই মুখে করিয়া লইয়া যাইব । কোথায় বাসর-ঘর! আমার সে বিবাহের বেশ কোথায় ! নিজের ভিতর হইতে একটা খটখট শব্দে জাগিয়া দেখিলাম, আমাকে লইয়া তিনটি বালক অস্থিবিদ্যা শিখিতেছে! বাকের যেখানে সখেদঃখ ধকধক করিত এবং