পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

邻斑讯牢领 রায়বংশ প্ৰায় লোপ পেয়ে এসেছিল । যে গ্রামে এরা প্ৰায় একশ’ ঘর ছিলেন, সেই গ্রামে আজ একশ’ বৎসর পূর্বে ছ’ঘর মাত্র জমিদার ছিল। এই ছ’ঘরের বিষয়সম্পত্তিও ক্রমে ধনঞ্জয় সরকারের হস্তগত হল। এর কারণ ধনঞ্জয় সরকার ইংরেজের আইন যেমন জানতেন, তেমনি মানতেন। ইংরেজের আইনের সাহায্যে, এবং সে আইন বঁচিয়ে, কি করে অর্থোপিার্জন করতে হয়, তার অন্ধি-সন্ধি ফিকির-ফন্দি সব তার নখগ্রে ছিল। তিনি জিলার কাছারিতে মোক্তারি করে দু’চার বৎসরের মধ্যেই অগাধ টাকা রোজগার করেন। তারপর তেজারিতিতে সেই টাকা সুদের সুদ, তস্য সুদে হুহু করে বেড়ে যায়। জনরব যে, তিনি বছর দশকের মধ্যে দশ লক্ষ টাকা উপায় করেন। এত না হোক, তিনি যে দু’চার লক্ষ টাকার মালিক হয়েছিলেন, সে বিষয়ে আর সন্দেহ নেই। এই টাকা করবার পর তার জমিদার হবার সাধ গেল, এবং সেই সাধ মেটাবার জন্য তিনি একে একে রায়বাবুদের সম্পত্তিসকল খরিদ করতে আরম্ভ করলেন ; কেননা এ জমিদারির প্রতি কাঠা জমি র্তার নখদর্পণে ছিল। রায়বংশের চাকরি করেই তাঁর চোঁদপুরুষ মানুষ হয়, এবং তিনিও অল্প বয়সে রুদ্রপুরের বড় সরিক ত্ৰিলোকনারায়ণের জমাসেরেস্তায় পাঁচ সাত বৎসর মুহুরির কাজ করেছিলেন। সকল সরিকের সমস্ত সম্পত্তি মায় বসতবাটি খরিদ করলেও, বহুকাল যাবৎ র্তার রুদ্রপুরে যাবার সাহস ছিল না, কেননা তঁর মনিবপুত্ৰ উগ্রনারায়ণ তখনও জীবিত ছিলেন। উগ্রনারায়ণ হাতে পৈতা জড়িয়ে সিংহবাহিনীর পা ছুয়ে শপথ করেছিলেন যে, তিনি বেঁচে থাকতে ধনঞ্জয় যদি রুদ্রপুরের ত্ৰিসীমানার ভিতর পদার্পণ করে, তাহলে সে সশরীরে আর ফিরে যাবে না। তিনি যে তার প্রতিজ্ঞা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন, সে বিষয়ে ধনঞ্জয়ের মনে কোনও সন্দেহ ছিল না। কেননা তিনি জানতেন যে, উগ্রনারায়ণের মত দুধর্ষ ও অসমসাহসী পুরুষ রায়বংশেও কখন জন্মগ্রহণ করেনি । উগ্রনারায়ণের মৃত্যুর কিছুদিন পরে, ধনঞ্জয় রুদ্রপুরে এসে রায়বাবুদের পৈতৃকভিটা দখল করে বসলেন। তখন সে গ্রামে রায়বংশের