পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S YR গল্পসংগ্ৰহ স্বৰ্গারোহণ করলে পটেশ্বরী যদি পত্যন্তর গ্ৰহণ করে, আর সে সংবাদ যদি স্বর্গে পৌঁছয়, তাহলে সেই মুহূর্তে স্বৰ্গ নরক হয়ে উঠবে। ( R ) বড়বাবুর মনের এই দুটি প্রধান প্রবৃত্তি, এই অনুরাগ আর এই বিরাগ, একজোট হয়ে তঁকে বড়দিনে থিয়েটারে নিয়ে যায় ; নচেৎ সখ করে তিনি অর্থ এবং সময়ের ওরূপ অপব্যয় কখনও করতেন না । বড়দিনের ছুটিতে পটেশ্বরী তার বাপের বাড়ী গিয়েছিল। আপিসের কােজ নেই, ঘরে স্ত্রী নেই,--অর্থাৎ বড়বাবুর জীবনের যে দুটি প্রধান অবলম্বন, দুই এক সঙ্গে হাতছাড়া হয়ে যাওয়াতে, তার কাছে পৃথিবী খালি হয়ে গিয়েছিল। স্ত্রী ঘরে থাকলেও ছুটির দিনে বড়বাবু অবশ্য বাড়ীর ভিতর বসে থাকতেন না। তবে এক ঘরে ফুল থাকলে তার পাশের ঘরটিকে তার সৌরভে যেমন পূর্ণ করে রাখে, তেমনি পটেশ্বরী অন্তঃপুরে থাকলেও অদৃশ্য ফুলের গন্ধের মত তার অদৃশ্য দেহের রূপে বড়বাবুর গৃহের ভিতর বার পূর্ণ করে রাখত। প্রতিমা অন্তৰ্হিত হলে মন্দিরের যে অবস্থা হয়, পটেশ্বরীর অভাবে তাঁর গৃহের অবস্থাও তদ্ৰৰূপ হয়েছিল। বড়বাবু এই শূন্য মন্দিরে কি করে দিন কাটাবেন, তা আর ভেবে পেতেন না। প্রথমত, তার কোনও বন্ধুবান্ধব ছিল না, তিনি কারও সঙ্গে মেলামেশা করতে ভালবাসতেন না। গল্প করা কিংবা তাস পাশা খেলা, এ সব তীর ধাতে ছিল না। তারপর তঁর বাড়ীতে কোনও ভদ্রলোক আসা তিনি নিতান্ত অপছন্দ করতেন। তঁর স্ত্রীর স্বভাবে কৌতুহল জিনিসট কিঞ্চিৎ বেশিমাত্রায় ছিল; তার স্বামীর কাছে কোনও লোক এলে, পটেশ্বরী খড়খড়ের ভিতর দিয়ে উকিঝুকি না মেরে থাকতে পারত না । তারপর সময় কাটাবার একটি প্রকৃষ্ট উপায়-বই পড়া-ৰ্তার কোন কালেই অভ্যাস ছিল না। তঁর বাড়ীতেও এমন কেউ ছিল না, যার সঙ্গে তিনি বাক্যালাপ করতে পারতেন। তঁর পরিবারের মধ্যে