পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড়বাবুর বড়দিন y vo ছিল, তার স্ত্রী আর তিনি। তিনি গী-সম্পর্কের যে মাসিটিকে পটেশ্বরীর প্রহরীস্বরূপে বাড়ীতে এনে রেখেছিলেন, তার সঙ্গে কথা কইতে বড়লাৰু ভয় পেতেন। কেননা ঐ ধার-করা মাসিমটি, তার সাক্ষাৎ পেলেষ্ট ঃখের কান্না কঁদিতে বসতেন, এবং সর্বশেষে টাকা চাইতেন। ঋড়বাবু টাকা কাউকেও দিতে ভালবাসতেন না, আর উক্ত মাসিমাটিকে ত নয়ই, কারণ তিনি জানতেন যে, সে টাকা মাসির গুণধর ছেলেটির মদের খরচে লাগবে। এই সব কারণে বড়বাবু নিরুপায় হয়ে দুটি গোটা দিন খবরের কাগজ পড়ে কাটিয়েছিলেন। ওরি মধ্যে এক খানিতে একটি বিজ্ঞাপন তার চোখে পড়ল। তাতে তিনি দেখলেন যে, সাধিনী থিয়েটারে গ্ৰীষ্টমাস রজনীতে “সংস্কারের কেলেঙ্কার” নামক প্রহসনের অভিনয় হবে। বলা বাহুল্য উক্ত প্রহসনের নাম শুনেই সেটির প্রতি র্তার মন অনুকূল হয়ে উঠল। তারপর তিনি সেই বিজ্ঞাপন হাতে এই জ্ঞানসঞ্চয় করলেন যে, উক্ত প্রহসনে সংস্কারকদের উপর বেশ এক হাত নেওয়া হবে ! এই বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে তঁর মন “সংস্কারের কেলেঙ্কার”-এর অভিনয় দেখবার জন্য নিতান্ত উৎসুক হয়ে উঠল। কিন্তু থিয়েটারে যাওয়া সম্বন্ধে তিনি সহসা মানস্থির করে উঠতে পারলেন না। তার প্রধান কারণ, তিনি ইতিপূর্বে কখনও থিয়েটারে যাননি, শুধু তাই নয়, তার স্ত্রীর সুমুখে তিনি বহুবার থিয়েটারের বহু নিন্দ করেছেন। থিয়েটারের বিরুদ্ধে তার আক্রোশের কারণ এই ৮ছিল যে, সেখানে ভদ্রঘরের মেয়েরাও যাতায়াত করে । তার মতে অন্তঃপুরবাসিনাদের থিয়েটারে যেতে দেওয়াও যা, আর পত্র আবড়াল দিয়ে স্ত্রী-স্বাধীনতা দেওয়াও তাই। ওর চাইতে মেয়েদের গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে দেওয়া শতগুণে শ্রেয়। আর তিনি যে সময়ে অসময়ে তার স্ত্রার কাছে এ-বিষয়ে তঁর কড়াকড়া মতামত সব প্ৰকাশ করতেন, তার কারণ তিনি শুনেছিলেন যে, থিয়েটার দেখা তার শ্যালাজগণের নিত্যকর্মের মধ্যে হয়ে উঠেছিল। পাছে তঁর স্ত্রী, তার বৌদিদিদের কুদৃষ্টান্ত অনুসরণ করে, এই ভয়ে তিনি পটেশ্বরীকে শুনিয়ে শুনিয়ে থিয়েটারের বিরুদ্ধে যত কটু কথা প্রয়োগ করতেন। তার মনোগত অভিপ্রায় ছিল, শ্বশুরকুলের SG