পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাম ও শ্যাম » ሷ % তিনি তা জানবেন ? এই কলিকালে কারও জন্মদিনে ত কোনও দৈববাণী হয় না, অতএব বলা বাহুল্য তাদের জন্মদিনেও হয়নি। তবে ছেলে দুটির বিষয়বুদ্ধি যে নৈসর্গিক এবং অসাধারণ, তার পরিচয় সেইদিনই পাওয়া গেল। তারা ভূমিষ্ঠ হতে না হতেই, তাদের জননীকে আধাআধি ভাগ বাটোয়ারা করে নিলে। একটি দখল করে নিলে তার দক্ষিণ অঙ্গ, আর একটি দখল করে নিলে তাঁর বাম অঙ্গ, এবং এই সুবন্দোবস্তের ফলে মাতৃদুগ্ধ তারা সমান অংশে পান করতে লাগল। মাতৃদুগ্ধ পান করবার প্রবৃত্তি ও শক্তির নামই যদি হয় মাতৃভক্তি, তাহলে স্বীকার করতেই হবে যে—এই ভ্ৰাতৃযুগলের তুল্য মাতৃভক্ত শিশু ভারতবর্ষে আর কখনও জন্মায়নি। ফলে, তারা দুধ না ছাড়তেই তাদের মাতা দেহ ছাড়লেন-ক্ষয়রোগে । এখানে একটি কথার উল্লেখ করে রাখা আবশ্যক। এরা দু’ভাই এমনি পিঠপিঠ জন্মেছিল যে, এদের মধ্যে কে বড় আর কে ছোট তা কেউ স্থির করতে পারলেন না। এইটেই রয়ে গেল এদের জীবনের আসল রহস্য, অতএব এ গল্পেরও আসল রহস্য। সে যাই তোক, কাৰ্যত দুই ভাই শুধু একবর্ণ একাকার নয়, একক্ষণজন্ম বলে প্ৰসিদ্ধ হল । শুভদিনে শুভক্ষণে তাদের অন্নপ্রাশন হল, এবং দন্তজা তাদের নাম রাখলেন-রাম ও শ্যাম। পৃথিবীতে যমজের উপযুক্ত এত খাস। খাসা জোড়া নাম থাকতে-যেমন নকুল-সহদেৱ, হরিহর, কানাই-বলাই প্রভৃতি-রাম-শ্যামই যে দত্ত মহাশয়ের কেন বেশি পছন্দ হল, তা বলা কঠিন। লোকে বলে, দত্তজা পুত্রদ্বয়ের আকৃতি নয়, বর্ণের উপরেক্ট দৃষ্টি রেখে এই নামকরণ করেছিলেন। এই যমজের দেহের যে বর্ণ ছিল তার ভদ্র নাম অবশ্য শ্যাম। সে যাই হোক এটা নিশ্চিত যে, তীর পুত্ৰদ্ধয় যে একদিন তাদের নাম সার্থক করবে, এ কথা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি । এতে র্তর দোষ দেওয়া যায়নি। কারণ রামশ্যামের নাম-করণের সময় আকাশ থেকে ত আর পুষ্পবৃষ্টি হয়নি! অনেকদিন যাবৎ রাম-শ্যামের কি শরীরে, কি অন্তরে, মহাপুরুষ