পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 S&S দাদা আদায় করে, আর একদিকে ছোটদের কাছ থেকে ভয়ভক্তি আদায় করে তঁরা বাক্যবলের কতকটা চৰ্চা ইতিপূর্বেই করেছিলেন, এবার তার সম্যক অনুশীলনে প্ৰবৃত্ত হলেন । রাম শ্যাম যেমন এ ধরাধামে প্রবেশ করা মাত্র, তাদের জননীকে, আপোষে আধাআধি ভাগ করে নিয়ে নিশ্চিন্তমনে ভোগ দখল করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা মাত্র, তারা তদ্রুপ আপোষে মাসরস্বতীকে আধাআধি ভাগ করে নিয়ে, ভোগ-দখল করতে ব্ৰতা হলেন । প্ৰাণীর একালে দুটি অঙ্গ আছে, এক রসনা আর এক লেখনী। রাম ধরলেন বক্তৃতার দিক, আর শ্যাম ধরলেন লেখার দিক। এর কারণ, স্কুলে থাকতেই তারা প্রমাণ পেয়েছিলেন যে অভিনন্দন জবর চত রামের মুখে, আর অভিযোগ জবর হত শ্যামের কলাম। বলা বাহুল্য নৈসর্গিক প্রতিভার বলে অচিরে রাম হয়ে উঠলেন একজন মহাবক্তা আর শ্যাম হয়ে উঠলেন একজন মহালেখক। যা এক কথায় বলা যায় রাম তা অনায়াসে একশ’ কথায় বলতেন, আর যা এক ছত্রে লেখা যায় শ্যাম তা অনায়াসে একশ’ চিত্রে লিখতেন । রাম শ্যামের বক্তব্য অবশ্য বেশি কিছু ছিল না। তার কারণ যারা অতর্নিশি৷ পরের ভাবনা ভাবে, তারা নিজে কোন কিছু ভাববার কোন অবসরই পায় না। ফলে, অনেক কথা বলে কিছু না বলার আর্টে তারা Gladstone-এর সমকক্ষ হয়ে উঠলেন। ১ রামের মুখ ও শ্যামের কলম থেকে অজস্ৰ কথা যে অনর্গল বেরত তার আরও একটি কারণ ছিল। জ্ঞানের বালাই ত তাদের তন্তরে চিলাই না, তার উপরে যে ধর্ম শরীরে থাকলে মানুষের মুখে কথা পাধে, কলমের মুখে কথা আটকায়, সে ধর্ম অৰ্থাৎ সত্যমিথ্যার ভেদজ্ঞান, দু'কড়ি দত্তের বংশধরযুগলের দেহে আদপেই ছিল না। এ জ্ঞানের অভাবটা যে পলিটিক্সে ও গল্প-সাহিত্যে কত বড় জিনিষ, সে কথা কি আর খুলে বলা দরকার ? যদি জিজ্ঞাসা কর যে তঁরা এই অতুল বাক-শক্তির চর্চা কোথায় এবং কি সুযোগে করলেন, এক কথায়, কোথায় তঁরা রিহার্সেল