পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

აჯტჰა iझम९२ রাম নিম্ন আদালতে আইনের ষে সব কুটতর্ক তুলেছিলেন, সে তর্ক এখানে তুললে তুমি ভেবড়ে যাবে, কেননা তার মর্ম তুমি বুঝতে পারবে না ; বেচারা মাজিস্ট্রেটও তার নাগাল পায়নি। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি কি রকম বুদ্ধি খেলিয়েছিলেন, তার একটা পরিচয় দিই। রাম এই আপত্তি তুললেন যে, ইংরেজের ইংরেজীর যা মানে, শ্যামের ইংরেজীর সে মানে করলে আসামীর উপর সম্পূর্ণ অবিচার করা হবে। কেননা শ্যাম যে ভাষা লেখেন সে তঁর নিজস্ব-ভাষা, এক কথায় সে হচ্ছে শ্যামের স্বকৃত-ভঙ্গ ইংরেজী ! বাঙলা খুব ভাল না জানলে সে ইংরেজীর যথার্থ অর্থ হৃদয়ঙ্গম করা যায় না। ফরিয়াদির সাহেবকেঁীসুলি এ। আপত্তির আর কোনও উত্তর দিতে পারলেন না, কেননা তিনি একথা অস্বীকার করতে পারলেন না যে, শ্যামের ইংরেজী ইংলণ্ডের ইংরেজী নয়। শ্যাম খালাস হলেন । লোকে রাম-শ্যামের জয় জয়কার করতে লাগিল । শ্যাম যে দিন খালাস পেলেন, বাঙলার সেদিন অল-ইংরেজরা যাকে বলে--একটি 'লাল হরফের দিন’ । লোকের অমন আনন্দ অমান উল্লাস, সেদিনের পূর্বে আর কখনও দেখা যায়নি। এমন কি এই ফচুকে কলকাতা সহরের লোেকরাও সেদিন যে কাণ্ড করেছিল তা এতই বিরাট যে বীরবলী ভাষায় তার বর্ণনা করা অসাধ্য, তার জন্য চাই “মেঘনাদবধ”-এর কলম । রাম-শ্যামকে একটি ফিটানে চড়িয়ে হাজার হাজার লোকে বড় রাস্তা দিয়ে সেই ফিটােন যখন টেনে নিয়ে যেতে লাগল, তখন পথঘাট সব লোকে লোকারণ্য হয়ে গেল, এত লোক বোধ হয়। জগন্নাথের রথযাত্রাতেও একত্র হয় না । লোকে বললে, রাম-শ্যাম কৃষ্ণাৰ্জন। তারপর এই যুগলমূর্তি দেখবার জন্য জনতার মধ্যে এমনি ঠেলা ঠেলি মারামারি লেগে গেল যে, কত লোকের যে হাত পা ভাঙলে তার আর ঠিকাঠিকানা নেই। আমি ভিড় দেখলে ভড়কাই-ওর ভিতর পড়লে বেহুস হয়ে যাবার ভয়ে, এবং সেই চড়কের সং দেখা ছাড়া অপর কোনও শোভাযাত্রা দেখতে কখনও ঘর থেকে বার হইনে । কিন্তু সেদিন উৎসাহের