পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नौब्ज-ब्लशिऊ আমাকে যখন কেউ গল্প লিখতে অনুরোধ করে, তখন আমি মনে মনে এই বলে দুঃখ করি যে, ভগবান কেন আমাকে নীল-লোহিতের প্ৰতিভা দেননি। সে প্রতিভা যদি আমার শরীরে থাকত, তাহলে আমি বাঙ্গলার সকল মাসিক পত্রের সকল সম্পাদক মহাশয়দের অনুরোধ একসঙ্গে অক্লেশে রক্ষা করতে পারতুম। গল্প বলতে নীল-লোহিতের তুল্য গুণী আমি অদ্যাবধি আর দ্বিতীয় ব্যক্তি দেখিনি। অনেক সময়ে মনে ভাবি যে, তার মুখে যে সব গল্প শুনেছি, তারই গুটিকয়েক লিখে গল্প লেখার দায় হতে খালাস হই । কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে সব গল্প লেখবার জন্যও লেখকের নীল-লোহিতের অনুরূপ গুণিপণা থাকা চাই। তঁর বলবার ভঙ্গীটি বাদ দিয়ে তঁর গল্প লিপিবদ্ধ করলে সে গল্পের আত্মা থাকবে বটে, কিন্তু তার দেহ থাকবে না। তিনি যে গল্প বলতেন, তাই আমাদের চােখের সুমুখে শরীরী হয়ে উঠত এবং সাঙ্গোপাঙ্গ মূর্তি ধারণ করত। এমন খুটিয়ে বর্ণনা করবার শক্তি আর কারও আছে কিনা জানিনে। কিন্তু আমার যে নেই, তা নিঃসন্দেহ। এ বর্ণনার ওস্তাদি ছিল এই যে, তার ভিতর অসংখ্য ছোটখাট জিনিষ দুকে পড়ত। অথচ তার একটিও অপ্রাসঙ্গিক নয়, অসঙ্গত নয়, অনাবশ্যক নয়। সুনিপুণ চিত্রকারের তুলির প্রতি আঁচড় যেমন চিত্ৰকে রেখার পর রেখায় ফুটিয়ে তোলে, নীল-লোহিতও কথার পর কথায় তঁর গল্প তেমনি ফুটিয়ে তুলতেন। তঁর মুখের প্রতি কথাটি ছিল ঐ চিত্ৰ-শিল্পীর হাতেরই তুলির আঁচড়। তারপর, কথা তিনি শুধু মুখে বলতেন না। গল্প ৰ্তার হাত, পা, বুক, গলা সব একত্র হয়ে একসঙ্গে বলত। এক কথায় তিনি শুধু গল্প বলতেন না, সেই সঙ্গে সেই গল্পের অভিনয়ও করতেন। যে তাকে গল্প বলতে না শুনেছে, তাকে তঁর অভিনয়ের ভিতর যে কি অপূর্ব