পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>bサ গল্পসংগ্ৰহ কটি বলবারও অবকাশ পেলেন না। তারপর এক সময়ে তঁর মনে হল যে, টঙ্গা এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে, আর তঁর দক্ষিণ ও বাম দুপাশ দিয়েই অসংখ্য সুন্দরীর শোভাযাত্রা চলেছে। নীল-লোহিত যে পথিমধ্যে কারও ভালবাসায় পড়ে যাননি, তার একমাত্র কারণ---এই নাগরীর হাটে কাকে ছেড়ে কার ভালবাসায় তিনি পড়বেন ? বিবাহ অবশ্য এক সঙ্গে দু’শ তিনশ করা যায়, কিন্তু ভালবাসায় পড়তে হয় মাত্র এক জনের সঙ্গে-অন্ততঃ এক সময়ে তা তাই। এদিকে পেট খালি, ওদিকে হৃদয় পূর্ণ; এই অবস্থায় নীল-লোহিত কংগ্রেস-ক্যাম্পে গিয়ে অবতরণ করলেন। সেখানে উপস্থিত হবামাত্র তীর রূপের নেশা ছুটি গেল। তিনি প্ৰথমে গিয়েই টিকিট কিনলেন, তাতেই তার পকেট প্ৰায় খালি হয়ে এল। তারপর শোনেন যে, কংগ্রেস-ক্যাম্পে আর জায়গা নেই; যার কাছেই যান, তিনিই বললেন, “ন স্থানং তিলধারণে।” ছ'দিন পেটে ভাত নেই, ছ’রাত্তির চোখে ঘুম নেই, তার উপর আবার যদি সুরাটের পথে পথে সমস্ত রাত ঘুরে বেড়াতে হয়—তাহলেই ত নিৰ্ঘাত মৃত্যু। নীল-লোহিত একেবারে জলে পড়লেন, আর ভেবে কোন কুলকিনারা করতে পারলেন না। তাঁর এই দুরবস্থা দেখে টঙ্গাওয়ালা দয়াপরবশ হয়ে তঁাকে Extremist; ক্যাম্পে নিয়ে যাবার প্ৰস্তাব করলে। নীল-লোহিতের নাড়ীতে আবার রক্ত ফিরে এল। টঙ্গা যে পথ দিয়ে এসেছিল, আবার সেই পথ দিয়েই ফিরে চলল। এবার কিন্তু কোনও বাড়ীর কোনও গবাক্ষ আর তঁর নয়ন আকর্ষণ করতে পারলে না-যদিচ প্ৰতি গবাক্ষেই একটি করে সন্ধাতারা ফুটে ছিল। তিনি অকারণে সমস্ত সুরাট-সুন্দরীদের উপর মহা চােট গেলেন, যেন তারাই তঁর কংগ্রেসের প্রবেশদ্বার আটকে দাঁড়িয়েছে। শেষটায় রাত আটটায় তিনি কংগ্রেসের মহারাষ্ট্র শিবিরে গিয়ে পৌঁছলেন, এবং পৌঁছেই পকেটে যে কটি টাকা অবশিষ্ট ছিল, সেই কািট টঙ্গাওয়ালাকে দিয়ে বিদায় করলেন। মহারাষ্ট্রশিবিরে লোকের ভিড় দেখে, সেখানে রাত কাটাতে তঁর প্রবৃত্তি হল না। সে যেন একটা Black hole, এক একটা ছোট্ট ঘরে পঞ্চাশ ষাট জন করে জোয়ান। “শুতে না