পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 झश्लथश् ' কংগ্রেসের কাজ সুরু হল, এমন সময় হঠাৎ নীল-লোহিত দেখতে পেলেন যে, উক্ত ভদ্রলোক কংগ্রেসের হোমরা-চোমরাদের মধ্যে বসে আছেন!! এ দেখে তিনি আর তঁর রাগ সামলাতে পারলেন না, ডান পায়ের নাগরা খুলে তঁকে ছুড়ে মারলেন। সেই নাগরাটাই লক্ষ্যভ্ৰষ্ট হয়ে প্রেসিডেণ্টের পায়ে গিয়ে লুটিয়ে পড়ল। মহা হৈ চৈ পড়ে গেল। নীল-লোহিতের কাণ্ড দেখে স্ত্রীলোকটি মুহূর্তের জন্য হতভম্ব হয়ে রইলেন । তার পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে নীল-লোহিতের হাত ধরে তিনি কংগ্রেসের তীবুর বাইরে এসে গাড়ীতে চড়ে বাড়ী ফিরলেন। আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার নীল-লোহিতকে বাঙ্গালী সাজিয়ে ব্যাগবিছানা সমেত সেই গাড়ীতেই তঁকে স্টেশনে পাঠিয়ে দিলেন। স্টেশনে নীল-লোহিত ব্যাগ খুলে দেখেন, তার ভিতর পাঁচশ টাকার নোট আর সেই স্ত্রীলোকটির একখানি ছবি রয়েছে। সেই টাকা দিয়ে টিকিট কিনে তিনি দেশে ফিরলেন। সুরাট-কংগ্রেসের যুগপ্রবর্তক জুতো যে নীললোহিতের পাদুকা, এ কথা শুনে আমরা সকলে স্তম্ভিত হয়ে গেলুম। নীল-লোহিতের মুখে এই অপূর্ব কাহিনী শুনে আমরা সকলে মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলুম—কেননা তাঁর এই গল্প সম্বন্ধে কি বলব কেউ তা ঠাউরাতে পারলুম না। খানিকক্ষণ চুপ করে থাকবার পর রামযাদব তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, তিনি সেই সুরাট-সুন্দরীর পাঁচ শত টাকা বেমালুম হজম করে ফেললেন ? নীল-লোহিত উত্তর করলেন —“না। আমি কাশীতে গিয়ে সেই পাঁচশ টাকা দিয়ে অন্নপূর্ণার পূজা দিয়ে এসেছি।” আবার সকলেই চুপ করলেন। তারপর মোহিনীমোহন জিজ্ঞাসা করলেন, “সে ছবিখানা তোমার কাছে আছে ?” নীল-লোহিত উত্তর করলেন-‘হঁ, আছে।” দ্বিতীয় প্রশ্ন হল-“সেখানি দেখাতে পাের ?” উত্তর—“দেখতে ইচ্ছে হয়, কিনে দেখতে পাের।” প্রশ্ন“সে ছবি বাজায়ে কিনতে পাওয়া যায় ?” উত্তর-“দেদার।” প্ৰশ্ন“কি রকম ?” উত্তর-“নুরজাহানের ছবি দেখলেই সেই সুরাট-সুন্দরীকে দেখতে পাবে। এ দুটি স্ত্রীলোকই এক ছাঁচে ঢালাই।” এর পর কিছু বলা বৃথা দেখে আমরা সভা ভঙ্গ করে চলে গেলুম।