পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীললোহিতের স্বয়ম্বর আদিপর্ব সেদিন রূপেন্দ্র আমাদের নবতর-জীবন সমিতিতে মহাবক্তৃতা করছিলেন, এই কথা সকলকে বোঝাবার জন্য যে, আমাদের দেশের মামুলি বিবাহপ্রথার বদলে স্বয়ম্বর-প্রথা না চালালে আমরা জাতি-গঠন কিছুতেই করতে পারব না। রূপেন্দ্রের এ বিষয়ে এত উৎসাহ হবার কারণ-প্ৰথমত তীর বাপ মা তার জন্য মেয়ে খুঁজছিলেন, দ্বিতীয়ত তিনি দুদিন আগে রঘুবংশের ষষ্ঠ সর্গ পড়েছিলেন, আর তৃতীয়ত তীর বিশ্বাস ছিল যে, তিনি যথার্থই রূপেন্দ্র, অর্থাৎ অসাধারণ সুপুরুষ। আর আমরা যে ঘণ্টাখানেক ধরে তাঁর বক্তৃত একমনে শুনড়িলুম, তার কারণ আমরা সকলেই ছিলুম। অবিবাহিত অথচ বিবাহযোগ্য। কাজেই এ আলোচনায় আমরা সকলেই মনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলুম, চুপ করে ছিলেন সুধু নীল-লোহিত। তাই রসিকলাল তঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কি হে, তুমি কোন কথা কইছ না কেন ? রূপেন্দ্রের প্রস্তাবে তোমার মৌনতা কি সম্মতির লক্ষণ না কি ?” নীল-লোহিত কিঞ্চিৎ বিরক্তির স্বরে বলেন, “যা হয় তা হওয়া উচিত, এরকম nonsensical কথার উপর আর কি বলব ?” এ কথা শুনে আমরা সকলেই কাণ খাড় করলুম, কেননা বুঝলুম এইবার নীল-লোহিতের কেচ্ছ সুরু হবে। আমি জিজ্ঞাসা করলুম“বাঙলার মেয়েরা আজও স্বয়ম্বরা হয় না কি ?” নাল-লোহিত বললেন, "আলবৎ ” আমি আবার প্রশ্ন করলুম, “তুমি কি করে জানলে ?” নীল-লোহিত বললেন, “জানলুম কি করে ? বষ্ট কি কাগজ পড়ে নয়, শুড়ির দোকান কিংবা গুলির আড়ায় পরের মুখে শুনেও নয়-নিজের চোখে দেখে ।” -05itथ (अर्थ ?