পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অদৃষ্ট RRS এই চিঠি লেখা আর তামাক সাজার ফুরসতে প্রাণবন্ধু আপিসের কাজ করত এবং সে কাজও সে করত। অন্যমনস্কভাবে । বলা বাহুলা যে সে ফুরসৎ তার কত কম ছিল। এর চিঠি ওর খামে পুরে দেওয়া তার একটা রোগের মধ্যে দাড়িয়ে গিয়েছিল। এ সত্ত্বেও সমগ্ৰ সেরেস্তা যে তাকে ছাড়তে চাইত না, সত্য কথা বলতে গেলে তার আসল কারণ এই যে, প্রাণবন্ধু সেরেস্তায় হুকোবরাদারীর কাজ করত। --আর সবাই জানত যে, অমন হু কোবরাদার মুচিখোলার নবাববাড়ীতেও পাওয়া দুষ্কর। তার করম্পর্শে দা-কাটাও ভেলসা তয়, খরসানও অম্বুরি হয়ে উঠত। প্রাণবন্ধুর উপরে সকলে সন্তুষ্ট থাকলেও, সে সকলের উপর সমান অসন্তুষ্ট ছিল। প্রথমত তার ধারণা ছিল যে, তার মাইনে যে বাড়ে না, তা সে চোর নয় বলে। অথচ তার বেতনবৃদ্ধির বিশেষ দরকার ছিল। কেননা, তার স্ত্রী ক্রমান্বয়ে নূতন ছেলের মুখ দেখতেন। বংশবৃদ্ধির সঙ্গে বেতনবৃদ্ধির যে কোনই যোগাযোগ নেই, এই মোটা কথাটা প্রাণবন্ধুর মনে আর কিছুতেই বসল না। ফলে তার মনে এই বিশ্বাস দৃঢ় হয়ে গেল যে, আপিসের কর্তৃপক্ষেরা গুণের আদর মােটেই করেন না। সুতরাং তার পক্ষে, কি কথায়, কি কাজে, কর্তৃপক্ষের মন যুগিয়ে চলা সম্পূর্ণ নিরর্থক। শেষটা দাঁড়াল এই যে, প্রাণবন্ধু যৗ-খুসি তাই করত, যা-খুসি তাই বলত,-কারো কোনো পরোয় রাখত না। কর্তৃপক্ষেরাও তার কথায় কাণ দিতেন না; কেননা, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে, প্রাণবন্ধু হচ্ছে স্টেটের একজন পোসানভোগ । ( \V ) এই নূতন ম্যানেজারের হাতে পােড় প্রাণবন্ধু পড়ল মুস্কিলে। সে ভদ্রলোক বোলা এগারটায় আপিসে আর কিছুতেই এসে জুটতে পারলে না। ফলে তাকে নিয়ে হুজুর পড়লেন আরও বেশি মুস্কিলে। নিত্য তার মাইনে কাটা গেলে বেচারা যায় মারা-আর না কাটলেও তীর ; নিয়ম যায় মারা। এই উভয়-সঙ্কটে তিনি তাকে কর্ম হতে অবসর