পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अतूछे ቅgX© » প্রাণবন্ধু যখন দুদিনেও শেষ করতে পারলে না, তখন তিনি দেওয়ানজীর প্রতি এই দোষারোপ করলেন যে, তিনি আমলাদের দিয়ে কাজ তুলে নিতে পারেন না। দেওয়ানজী উত্তর করলেন যে, তিনি সকলের কাছে কাজ আদায় করতে পারেন, কিন্তু পারেন না এক প্রাণবন্ধুর কাছ থেকে। যেহেতু প্ৰাণবন্ধু আপিসে এসে আপিসের কাজ না করে নিতি ঘণ্টাখানেক ধরে আর কি ইনিয়ে বিনিয়ে লেখে। প্রাণবন্ধুর তলব হল এবং কৈফিয়ৎ চাওয়া হল। হুজুরের উপর দু-দু-বার জিত হওয়ায় তার সাহস বেজায় বেড়ে গিয়েছিল। সে ম্যানেজার সাহেবের মুখের উপর এই জবাব করলে,-“হুজুর আমার লেখার একটু হাত আছে, তাই লিখে লিগে হাত পাকাপার চেষ্টা করি।” -“তোমার হাতের লেখা যথেষ্ট পাকা, তা আর বেশি পাকাবার দরকার নেই। আর যদি আরও পাকাতে হয় তা আৰ্পিসের লেখা লিখলেই হয়---বাজে লেখা কেন ?” —“হুজুর, হাতের লেখার কথা বলছিনে। আমার প্রাণে একটু কাব্যরস আছে, তাই প্রকাশ করবার জন্য লিখি। আর সে লেখা বাজে নয়। গরীব মানুষের না হলে সে লেখা সব পুস্তক আকারে প্রকাশিত হত। আমাকে তাই ঘরের লোকের পড়ার জন্যই লিখতে হয়। যদি আমার পয়সা থাকত, তাহলে তা ছাইপােশ, লিখে দেশের মাসিকপত্র ভরিয়ে দিতে পারতুম।” এই উত্তরে চাটুয্যে-সাহেবের আঁতে ঘা লাগল। তিনি যে আৰ্পিসে বসে মাসিক পত্রিকার জন্য ইনিয়ে বিনিয়ে হরেক-রকম বেনাৰ্মা প্ৰবন্ধ লিখতেন। আর সে লেখাকে সমালোচকের চাইপােশ বলত এ কথা আর যার কাছেই থাক, তার কাছে ত আর অবিদিত ছিল না। তিনি আর ধৈৰ্য ধরে থাকতে পারলেন না, চক্ষু রক্তবর্ণ করে পািল ॐालन“দেখো, তোমার হওয়া উচিত ছিল--” তঁর কথা শেষ করতে না দিয়েই প্রাণবন্ধ বলে ফেলল—“বড়মানুষের জামাই! কিন্তু অদৃষ্ট ত আর সবারই সমান নয়।”