পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्शांौ S ዓ » আমি শুধু ট্রেণে ট্রেণে ঘুরে বেড়াই-একদিন না একদিন তাদের ধরণই, এ লুকোচুরি খেলার একদিন সাঙ্গ হবেই। গেরুয়া ধারণের উদ্দেশ্যযাতে করে তারা আমাকে চিনতে না পারে। আর সঙ্গে যে এই বন্দুক নিয়ে বেড়াই, তার কারণ জানেন ? এবার যেদিন ও-দুজনের সাক্ষাৎ পাব, সেদিন এর দুটি গুলি দুজনের বুকের ভিতর বসে যাবে। আমার স্ত্রী হরণ করে নিয়ে যাবে, আর অক্ষতশরীরে হোসে খেলে বেড়ালে, এমন লোক এ দুনিয়ায় আজও জন্মায়নি। তারপর-অস্থ্যগুরুস্যাং দিশি দেবতাত্মা হিমালয়ে নাম নগাধিরাজঃ-তার ক্রোড়ে আশ্ৰয় নেব । এই কথা বলতে না বলতে ট্ৰেণ দেওঘর স্টেশনে এসে পৌছল। পাশ দিয়ে একখানি ট্ৰেণ উধ্বশ্বাসে ছুটে গেল। সিতিকণ্ঠ সিংহঠাকুর জানােলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বললেন, “এই যে, ট্রেণে তারা যাচ্ছে।” এই বলেই তিনি বন্দুক হাতে করে তড়াক করে প্লাটফরমে লাফিয়ে পড়লেন। তারপর বন্দুকের ঘোড়া দুটি টানলেন। দুবার শুধু ক্লিক ক্লিক আজয়াজ হল। তিনি ভুলে গিয়েছিলেন যে, তার ভিতর টােটা নেই। তখন তিনি আলখাল্লার বুকের পকেট থেকে দুটি টােটা বার করে বন্দুকে পূরলেন,—ইতিমধ্যে সে ট্ৰেণখানি অদৃশ্য হয়ে গেল। আমাদের গাড়ীও ছেড়ে দিলে। সিতিকণ্ঠ বন্দুক হাতে দেওঘরের স্ট্রেশনের প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে রইলেন।. তারপর সিতিকণ্ঠকে জীবনে আর কখনও দেখিনি, নিজের গাড়ীতেও নয়, পাশের গাড়ীতেও নয়। আমি শুধু ভাবি, সিতিকণ্ঠ সিংহঠাকুর এখন কোথায় ? হিমালয়ে না। সাগরপারে, জেল না। পাগলা-গারদে ?