পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rao গল্পসংগ্ৰহ ছোকরা সমেত। দেশ যখন শান্ত হল, তখন আবার সর্বানন্দ মনের সুখে সেতার বাজাতে লাগলেন ; যদিচ এই সব দাঙ্গাহাঙ্গামার ফলে তঁর অবস্থা অত্যন্ত কাহিল হয়ে পড়েছিল, আর তার রূপলাবণ্য সব ঝরে পড়েছিল-যেন শরীরে কি বিষ ঢুকেছে। ভৈরবনারায়ণও গেলেন, বড়বাড়ীর সুখের পায়রাও সব উড়ে গেল। ঐ পড়ে। বাড়ীতে পড়ে রইলেন শুধু মহালক্ষী দিদি আর একটি পুরাণে দাসী! আর দিদি ঐ রাবণের পুৱীতে একা বসে একমনে দিবারাত্র তুলসীকাঠের মালা জপ করতে সুরু করলেন। তিনি যতদিন বেঁচেছিলেন, সর্বানন্দের মনের আগুন একেবারে নেবেনি। তবে সর্বানন্দ ব্ৰহ্মহত্যা করে যে আবার স্ত্রীহত্যা করেনি, সে শুধু তোমার ঠাকুরদাদার খাতিরে। মহালক্ষনীকে সকল বিপদ থেকে তিনি রক্ষা করেছিলেন। তোমার ঠাকুরদাদার ধারণা ছিল যে মহালক্ষী পাগল-একেবারে বদ্ধ পাগল। দিদি যতদিন বেঁচেছিলেন, ততদিন তিনি হাতের শাখাও ভাঙেননি, পাছে তার স্বামীর অমঙ্গল হয়। ভৈরবনারায়ণ যে কবে কোথায় মারা গেলেন, সে খবর আমাদের কেউ দেয়নি। তারপর মহালক্ষী দিদি মারা যাবার পর যে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়, তাতেই এই পাঁচমহল বাড়ী একেবারে ভূমিসাৎ হয়ে গেছে। আর সেখানে রয়েছে জঙ্গল, আর বাস করছে বাঘ ও শূয়োর। এরাই এখন ভৈরবনারায়ণের বংশরক্ষা করছে। ভাল কথা, আশা করি মহালক্ষী ২. দিদি মরে স্বৰ্গে যায়নি, কেননা সেখানে গেলে যে অতসীর সঙ্গে দেখা হবে ।