পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূতের গল্প আমি কখনও ভূত দেখিনি, আর যারা দেখেছেন, তারা কি যে দেখেছেন, তা বলতে পারেন না। তঁদের কথা প্রায়ই অস্পষ্ট, তার কারণ, ভূত হচ্ছে অন্ধকারের জীব-তার কোনই কাটাৰ্টাটা রূপ নেষ্ট । আমি 4क?ि ভদ্রলোকের মুখে দিনদুপুরে রেলগাড়ীতে যে অদ্ভুত গল্প শুনেছি, তার প্রধান গুণ এই যে, ব্যাপার যা ঘটেছিল, তার একটা স্পষ্ট রূপ আছে { আমি কলেজ থেকে বেরিয়ে রেলরাস্তায় কনট্রাক্টরি কাশে ভর্তি হই। ঐ ছিল আমার পৈতৃক ব্যবসা। আমি একবার পারলাকিমেডি যাচ্ছিলুম। পারলাকিমেডি কোথায় জানেন ?-গঞ্জাম জেলায়। বি.এন.আর-এর বড় লাইন থেকে পারলাকিমেডি পর্যন্ত নে ফেঁকড়া লাইন বেরিয়েছে, সে লাইন তৈরীর কনট্রাক্ট আমরাই নিষ্ট। আর তারই হিসেবা-নিকেশ করতে সেখানকার রাজার ওখানে যাই । গাড়ী যখন বিরহামপুর স্টেসনে পৌছল, তখন বেলা প্রায় এগারোটা। ঐ এগারোটা বেলাতেই মাথার উপরে আর চারপাশে রোদ এমনি গাঁ গাঁ করছিল যে, কলকাতায় বেলা দুটাে তিনটােতেও অমন চােখ-ঝলসানো রোদ দেখা যায় না । সে ত আলো নয়, আগুন । এরকম আলোয় পৃথিবীতে অন্ধকার বলেও যে একটা জিনিস আছে, তা ভুলে যেতে হয়। গাড়ী ষ্টেসনে পেঁৗছতেই একটি হৃষ্টপুষ্ট বেঁটেখাটাে সাহেব এসে কামরায় ঢুকলেন। তিনি যে একজন বড় সাহেব তা বুঝলুম তার উর্দি-পরা চাপরাশীদের দেখে। দুটি একটি বাবুও সঙ্গে ছিলেন, মাদ্রাজা কি উড়ে-চিনতে পারলুম না ; কিন্তু তাঁদের ধরণ-ধারণ দেখে বুঝলুম যে, তারা হচ্ছেন সাহেবের আফিসের কেরাণী। কারণ তঁরা সাহেবের জিনিসপত্র সব গাড়ীতে উঠল। কিনা দেখতে প্লাটফরমময় छूछू করছিলেন আর মধ্যে মধ্যে কুলীদের পিঠে ও মাথায় চড়টা-চাপড়টা লাগাচ্ছিলেন। অবশেষে গাড়ী ছাড়ল। প্রথমে সঙ্গটিকে দেখে