পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

सूठद्म शन्न R মনে হল, নাবার ঘরের কবাট হয় বাতাসে নড়ছে, নয় ঈদুরে ঠেলছে। এ দেশে এক একটা ইদুর এক একটা বেড়ালের মত। তারপর যখন দেখলুম শব্দ আর থামে না, তখন বিছানা থেকে উঠে revolver হাতে নিয়ে নাবার ঘরের দরজা খুলে দিলুম। খুলেই দেখি, একটি স্ত্রীলোক। চমৎকার দেখতে, একেধারে নীলপাথরের ভেনাস। তার গলায় ছিল। লাল রঙের পুতির মালা, দু’কাণে দুটি বড় বড় প্রবাল গোঁজা, আর ডান হাতের কন্দ্রায় একটি পুরু শাঁখের বালা। মাথার বঁা দিকে চূড়া বাঁধা ছিল, আর পরণে এক হাত চওড়া লাল পাড়ের সাদা শাড়ী।। এ মূৰ্তি দেখে আমি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলুম। সে আমাকে দেখে হেসে বললে, “তোমার ও পিস্তল দেখে আমি ভয় পাইনে। গুলি আমার গায়ে লাগবে না। আমি কেন এখানে এসেছি জান ? তুমি যার বদলী এসেছ, আমি ছিলুম। সেই রাজাসাহেবের রাজরাণী। এই হচ্ছে আমার ঘর, এই হচ্ছে আমার বাড়া। আমি ঐ খাটে শুতুম, আর ঐ চৌকীতে বসে কঁচের গেলাসে বিলেতি আরক খেতুম। এক কথায় আমি রাণীর হালে চিলুম। তারপর রাজাসাহেব একবার ছুটি নিয়ে বিলেত গেল, আর ফিরে এল মােমের পুতুলের মত একটি বিলেতি মেম নিয়ে। আর আমাকে দিলে সরিয়ে। সাহেব কিন্তু আমাকে মাস মাস খরচার টাকা পাঠিয়ে দিত। ” তার মাসখানেক পর সে মেমটি একদিন হঠাৎ মারা গেল, অথচ তার কোনরকম ব্যারাম হয়নি। রাজাসাহেব তাঁর স্ত্রী কিসে মারা গেল, ভেবে পলেন না। তারপর তার চৌকীদার তার কাণে কি মন্তর দিলে। তাতেই ঘটল সৰ্বনাশ। ও বেঁটা ছিল আমার দুধমন | মেমটি মারা যাবার কিছুদিন পরে যখন দেখলুম সাহেব। আর আমাকে ডেকে পাঠালে না, তখন আমি মনে করলুম, সাহেবের কাছে নিজেই ফিরে যাই। সে আমাকে আবার নিশ্চয়ই ফিরে নেবে। রাজাসাহেবকে আর কেউ জানুক আর না জানুক, আমি ত জানতুম। দিনটে কুলী-মজুর নিয়ে কাটাতে পারলেও, রাত্তিরে আমাকে ছেড়ে সে থাকতে পারবে না।