পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্রাজেডির সূত্রপাত আমি একদিন কাগজে দেখলুম যে, তরুণেন্দ্রনাথ রায় এম, এ, পরীক্ষায় ইংরেজীতে ফাস্ট হয়েছে। এ সংবাদ পেয়ে আমি মহাসুখী হলুম। কারণ তরুণ আমার আকৈশোর বন্ধু নৃপেন্দ্রনাথ রায়ের বড় ছেলে। ছোকরাটিকে আমিও পুত্রের মত স্নেহ করতুম। তাকে আমি বাল্যকাল থেকেই জানি, আর সে সব হিসেবেই ভাল ছেলে হয়ে উঠেছিল। তার তুল্য সুস্থ, সবল ও সুন্দর ছেলে, লেখাপড়ায় যারা ফাস্ট সেকেণ্ড হয়-তাদের মধ্যে প্রায় দেখা যায় না। তরুণ দেখতে তার বাপের মত সুন্দর নয়। তরুণের মুখে নাক-চােখ অবশ্য মাপজোকের হিসেবে নৃপেনের চাইতে ঢের বেশি correct ছিল; কিন্তু ছেলেবেলা থেকে দেখে আসছি যে, নৃপেনের রূপের ভিতর এসবের অতিরিক্ত কি-একটা পদাৰ্থ ছিল, যা মানুষের মনকে আকর্ষণ করে। এ-জাতীয় স্ত্রী-পুরুষ বােধ হয় সকলেই দেখেছেন, যাদের পাথরের মুতিতে তাদের আসল রূপ ধরা পড়ে না; যদি কোথাও ধরা পড়ে ত সে গুণীর হাতের ছবিতে। কারণ এ-জাতীয় রূপের যা প্রধান গুণ-তর আকর্ষণী শক্তি, সে গুণ বোধ হয় দেহের নয়, মনের। সে যাই হােক, আমি স্থির করলুম যে, দুপুরবেলা স্নানাহারের পর নৃপেনকে congratulate করতে যাব। তাঁর ছেলে যে পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম পদ লাভ করেছে, এতে তিনি অবশ্য মহা আহলাদিত হয়েছেন। বিশেষত তিনি যখন নিজে একজন প্রফেসার, আর তরুণের তিনিই ছিলেন প্ৰাইভেট টিউটর, তখন তঁর ছেলের এই পাশের গৌরবে তিনিও অর্ধেক ভাগীদার। আমি সেইদিনই বিকেলে নৃপেনের বাড়ীতে গিয়ে উপস্থিত হলুম। কিন্তু আমার বন্ধুর কথাবাত শুনে একটু আশ্চর্য হয়ে গেলুম। দেখলুম তরুণের কৃতিত্বে তিনি অবশ্য সুখী হয়েছেন ; কিন্তু আমি যতটা উত্তেজিত হয়েছিলুম, তিনি ততটা হননি। বরং তঁকে দেখে