পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&br *नम्११छ् পরস্পর কথাবার্তা আরম্ভ করলুম, যেন আমরা দুজনে কতকালের বন্ধু। আমি তাকে এ-বইয়ের ছবি দেখাই, সে আর-একখানি বই টেনে নিয়ে জিজ্ঞেস করে আমি তা পড়েছি কিনা। এই করতে করতে কতক্ষণ কেটে গেল তা জানিনে। তার কথাবার্তায় বুঝলুম যে, তার পড়াশুনো আমার-চাইতে ঢের বেশি। জার্মান, ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান, তিন ভাষার সঙ্গেই দেখলুম তার সমান পরিচয় আছে। আমি ফ্রেঞ্চ জানতুম, তাই নিজের বিদ্যে দেখাবার জন্যে একখানি ফরাসী কেতাব তুলে নিয়ে, ঠিক তার মাঝখানে খুলে পড়তে লাগলুম ; সে আমার পিছনে দাঁড়িয়ে, আমার কঁধের উপর দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখতে লাগল, আমি কি পড়ছি। আমার কঁধে তার চিবুক, আমার গালে তার চুল স্পর্শ করছিল; সে স্পর্শে ফুলের কোমলতা, ফুলের গন্ধ ছিল ; কিন্তু এই স্পর্শে আমার শরীর-মনে আগুন ধরিয়ে দিলে। ফরাসি বইখানির যা পড়ছিলুম, তা হচ্ছে একটি কবিতা Si vous n'avez rien à me dire, Pourquoi venir auprès de moi! Pourquoi me faire ce sourire Qui tournerait la tête au roi ! এর মোটামুটি অর্থ এই—“যদি আমাকে তোমার বিশেষ কিছু বলবার না থাকে ত আমার কাছে এলেই বা কেন, আর আমন করে হাসলেই বা কেন, যাতে রাজারাজড়ারও মাথা ঘুরে যায়।” আমি কি পড়ছি দেখে সুন্দরী ফিক করে হেসে উঠল। সে হাসির ঝাপটা আমার মুখে লাগল, আমি চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলুম। আমার পড়া আর এগোলো না। ছোট ছেলেতে যেমন কোন অন্যায় কাজ করতে ধরা পড়লে শুধু হেলে-দোলে বঁ্যাকে-চোরে, অপ্ৰতিভভাবে এদিক ওদিক চায়, আর কোনও কথা বলতে পারে না,-আমার অবস্থাও তদ্রুপ হয়েছিল । আমি বইখানি বন্ধ করে বৃদ্ধিকে ডেকে তার দাম জিজ্ঞেস করলুম। সে বল্পে, এক শিলিং। আমি বুকের পকেট থেকে একটি মরক্কোর