পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পসংগ্ৰহ ܕܟܼܘ তাহলে হুড়কে খুলে দিলে কে ? আর যখন দেখা গেল যে মন্দিরের মধ্যে অপর কোনও কিছু নেই, তখন আগে র্যাকে প্রতিমা বলে ভুল হয়েছিল, তিনিই যে ও দ্বার মুক্ত করেছিলেন, সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ থাকতে পারে না। সেটি যখন দেখতে দেবীর মত নয়। তখন অপসরা না হয়ে আর যায় না ! -খুব কথা উল্টে নিতে শিখেছিস বটে। --ব্ৰাহ্মণের ছেলে যখন দেখলে যে, সেই মূর্তিটির চোখে পলক পড়ছে, নাকে নিশ্বাস পড়ছে, তখন আর তার বুঝতে বাকী থাকল না যে, স্বর্গের কোনও অন্সর অভিসারে বেরিয়েছিল, অন্ধকারে পথ ভুলে পৃথিবীতে এসে পড়েছে, আর এই ঝড়বৃষ্টির ঠেলায় এই মন্দিরে এসে আশ্ৰয় নিয়েছে। বেচারা মহা-ফাঁপরে পড়ে গেল। দেবী হলে পূজা করতে পারত, মানবী হলে প্ৰণয় করতে পারত, কিন্তু অপসারকে নিয়ে সে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ল। তার মনের ভিতর একদিক থেকে ভক্তি আর একদিক থেকে গ্ৰীতি ঠেলে উঠে পরস্পর লড়াই করতে ठळे । --কি বললি, ভক্তি ও প্রীতি পরস্পর লড়াই করতে লাগল ? ও দুই ত এক সঙ্গেই থাকে। -ও দুই শুধু একসঙ্গে থাকে না, একই জিনিস। আমাদের মতে ভক্তি পরাগ্রীতি, আর গ্ৰীতি অপরাভক্তি। --মাফ করবেন গোসাইজি। ভক্তির জন্ম ভয়ে, আর প্রীতির জন্ম ভরসায়। ও দুই একসঙ্গে ঘর করে বটে, কিন্তু সে বোন-সতীনের মত। --ব্ৰাহ্মণের ছেলেকে ওরকম অকষ্টব্যুদ্ধে ফেলে রাখা ঠিক নয়! অপসারদের প্রতি ভক্তি। রাম, সে তা হবারই জো নেই, তবে প্ৰণয়ে দোষ কি ! --হুজুর, দোষ কিছু নেই, সম্পর্কে বাধে না। তবে লোকে বলে অপসারীর সঙ্গে প্রেম করলে মানুষ পাগল হয়। -কথা ঠিক, কিন্তু সে হচ্ছে একরকম সৌখীন পাগলামি। স্ত্রীলোকের সঙ্গে ভালবাসায় পড়লে লোকে মাথায় মধ্যম নারায়ণ মাখে