পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফরমায়েসি গল্প \9ጝ¢ না বুঝেই আপনার সব চঞ্চল হয়ে উঠেছেন। আসলে ঘটনা। এই যে, মেয়েটি সধবা বটে, কিন্তু পরকীয়া নয়। —তুই দেখছি বেটা একেবারে বেপরোয়া হয়ে গিয়েচিস, যা মুখে আসছে তাই বলছিস। স্ত্রীলোকটা হল সধবা, অথচ কারও স্ত্রী নয়। এমন অসম্ভব কাণ্ড মগের মুলুকেও হয় না। --হুজুর, আমি মিছে কথা বলিনি। মেয়েটির বিয়ে হয়েছিল বটে, কিন্তু দশ বৎসর স্বামী নিরুদেশ। আর সে যখন স্বামীর পথ চেয়ে বসে বসে শেষটায় হতাশ হয়ে পথে বেরিয়ে পড়েছে-তখন তাকে বেওয়ারিশ হিসেবেই ধরতে হবে । -“নষ্টে মৃতে প্ৰব্ৰজিতে”-এ বচন শাস্ত্রে থাকলেও কাব্যে নেই। একালে ওসব কথা মুখে আনতে নেই, কেননা তা শুনে অর্বাচীনদের মতিভ্রম হতে পারে। আজ যদি তোমরা ও সব কাব্যে ঢালাও, দুদিন পরে তা সমাজে চলবে, তারপর সব অধঃপাতে যাবে। দেখ ঘোষাল, তুমি আমার অতিশয় প্রিয়পাত্ৰ, পুত্ৰতুল্য, কেননা তোমার নব নব উন্মেষশালিনী বুদ্ধি আছে; কিন্তু রঙ্গরসের ভূত যখন তোমার ঘাড়ে চাপে, তখন তুমি এত প্ৰলাপ বক যে প্ৰবীণ লোকের পক্ষে সে ক্ষেত্রে তিষ্ঠান ভার। আজ যে রকম উচ্ছঙ্খলতার পরিচয় দিচ্ছ, তাতে আমি তোমাকে ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছি। এই বলে পণ্ডিত মশায় ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কি ভেবে তীর গতিরোধ হল। এই সুযোগে ঘোষাল তার কাছে জোড়হস্তে নিবেদন করলে :- আপনি আমার ধর্ম-বাপ। আপনার পায়ে ধরি, আমাকে বিনা অপরাধে ত্যাজ্যপুত্র করে চলে যাবেন না। এতটা উতলা হবার কোনই কারণ নেই। সিথেয় সি দূর থাকলেই যে সধবা হতেই হবে, এমন ত কোনও কথা নেই। ও মেয়েটি ছিল। ভৈরবী তাই না তার মাথায় ছিল সিঁদুর। এ কথা শুনে সভা আবার শান্ত হল, স্মৃতিরত্ন তঁর আসন গ্ৰহণ করলেন। রায় মশায় কিন্তু খাড়া হয়ে বসে বজ-গম্ভীর স্বরে বললেন :-