পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

80 8 外窗不3传 কলকাতায় ; কেননা বাঙ্গালীরা সঙ্গীতের জন্য মেহন্নত করে না, কিন্তু পয়সা খরচ করে। বসন্তারাও কলকাতায় গিয়ে একটি সরু গলির ভিতর একটি পুরোনো প্রাসাদ ভাড়া নিলেন, যার সংলগ্ন কতকগুলো একতালা ছোট ছোট কামরা ছিল ; বোধ হয়। সেকেলে কোন ধনী ব্যক্তির আমলাদের থাকবার ঘর। আমরা সদলবলে সেই বাড়ীতে এসে আডড গাড়লুম ও ব্যবসা খুললুম। পয়সা তা দেদার আসতে লাগল। শ্রোতার হল দু’দল--অর্থাৎ যারা সঙ্গীতের স’ও জানে না, অথচ সঙ্গীতের মুরুবি ; আর অপর দল-যারা সেতার পিড়িং পিড়ং করতে পারে আর শাস্ত্রের বুলি আওড়ায়। মুরুব্বিারা মুগ্ধ হত বীণার গান শুনে না হোক, ছবি দেখে ; আর গুণধররা অবাক হত সেতারীর তরল অঙ্গুলির বিচিত্ৰ লীলা দেখে। তিনি যার সাধনা করেছিলেন-সে সেতারের হঠযোগ। বীণার যাত্ৰাভঙ্গ মাসখানেক পরে একদিন রবিবার সন্ধ্যোয় আমরা পগগধারার দল আসরে বসে আছি, আর বীণাদেবী আমাদের মধ্যে নিবাত-নিষ্কম্প প্রদীপের মত বিরাজ করছেন। একটু দূরে জনকতক গুণী ও ধনী শ্ৰোতা বসে আছেন। বসন্তরাও তখন মৃদঙ্গ মেঘ ডাকাচ্ছেন, হাতের কলকব্জা সব খেলিয়ে নেবার জন্য। এমন সময় হিম্মত সিং নীচে থেকে উপরে এসে বললে,-পাশের বাড়ীতে একটি বাবুর ভারি অসুখ, তিনি বলে পাঠিয়েছেন যে মেহেরবানি করে গান-বাজনা যদি বন্ধ করেন, তাহলে তিনি একটু ঘুমােতে পারেন। এ কথা শুনে শ্রোতাদের ভিতর থেকে একজন স্থূলকায় ঘোর কৃষ্ণবৰ্ণ ধনী বলে উঠলেন-“তিনি মরুন আর বঁাচুন, আমাদের আনন্দোৎসব চলবে।” এই নিষ্ঠুর কথা শুনে বীণাদেবী আগুন হয়ে উঠলেন ও আমাকে হুকুম করলেন-“ঘোষাল, তুমারা পাগড়ি উতারো আওর নীচু যাকে পুছুকে আও-বাঙ্গালী লোক কেয়া মাঙ্গত। বাঙ্গলা বোলনেকে তুমারা আদিত হ্যায়।” আমি তখনই আমার পাগড়ি বসন্তারাওয়ের হাতে দিয়ে নীচে নেমে গেলুম; আর পাঁচ