পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুতুলের বিবাহ-বিভ্ৰাট 8R to এতে বোেসগিন্নী অপমানিত বোধ করলেন,-বললেন এ হচ্ছে উকিলের উপর জমিদারের অবজ্ঞার চােখে-আঙ্গুল দেওয়া চাল। আমি বোেসগিনীকে গিয়ে বললুম-ও বাড়ীর মেয়ে আগে দেখবার কোনও প্রয়োজন নেই। সকলেই জানে, তাদের চাঁপা ফুলের মত রঙ, তিলফুলের মত নাক, পদ্মফুলের মত চােখ, গােলাপফুলের মত গাল, দাড়িমফুলের মত ঠোঁট, কুন্দযুলের মত দাঁত। এতে রাগ করবার কিছু নেই।-বলতে ভুলে গিয়েছি, বোস পরিবার যেমন কালো তেমনি নিরাকার । গিন্নােম যে কনে দেখাতে কিছুতেই রাজি হন নি, তার কারণ শুনলুম-তিনি নাকি তাকে সাজাচ্ছিলেন। র্তার বিশ্বাস ছিল যে, তার তুল্য অপূৰ্বরকম কনে সাজাতে আর কেউ পারে না। কনের সাজ হবে পুরো স্বদেশী, অথচ চমৎকার। কনে আমি অবশ্য দেখিনি। কিন্তু শুনেছি পুতুলটি ছিল কাশীর গুড়িয়া পুতুল। তাকে পরানো হয়েছিল তাসের কাপড়ের ঘাঘরা, কিংখাপের চোলী, দিল্লীর ওড়না, পায়ে দেওয়া হয়েছিল পাঞ্জাবের জরীর নাগর। আর তার গহনা ছিল আগাগোড়া স্বদেশী ও সেকেলে। অবশ্য গহনার বিষয় আমি বেশি কিছু জানি নে। তবে শুনেছি-কঙ্কন, রুলি, মরদান, মুড়কিমাদুলি, বাজু, তাবিজ, বাজুবন্ধ, চন্দ্রহার, রতনচক্র, বঁকমল, পায়জোড়, চুটুকি, কান, কানবালা, নিথ, নােলক, নাকচাবি, বেসর-তার শোভা বৃদ্ধি করছিল। অবশ্য চিক, গোপহার, সরস্বতী হার, সাতনরীও তার গলায় ওতপ্ৰোতভাবে দেওয়া হয়েছিল। এই সালঙ্কার কন্যার গা ছিল না, ছিল শুধু গহন। খোকাবাবুর খেয়ালের মত । শুভদিনে, শুভক্ষণের আধা ঘণ্টা আগে বোসজা বরকে সঙ্গে করে মোটরগাড়ীতে এলেন। বাজনার ভিতর গ্রামােফোনে বাজছিল, “তুমি কাদের কুলের বউ ?” আর বাড়ীর ভিতর মেয়ের হুলুধ্বনি করতে লাগল। গিমীমা এসে বললেন-দেখি, বর স্বদেশী কি না। দেখে কিছু খুৎ ধরতে পারলেন না। একটা এক-হাত প্রমাণ জাপানী পুতুল, যা জাপান