পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার-ইয়ারী-কথা (5ሳ ঘুমিয়ে পড়া সহজ। আমি সেই দিনই Ifracombe) যাত্র করলুম। এই যাত্ৰাই আমাকে জীবনের একটি অজানা দেশে পৌছে দিলে। আমি যে হোটেলে গিয়ে উঠি, সেটি Ifracombe-এর সব চাইতে বড়, সব চাইতে সৌখীন হোটেল। সাহেব মেমের ভিড়ে সেখানে নড়বার জায়গা ছিল না, পা বাড়ালেই কারও না। কারও পা মাড়িয়ে দিতে হত। এ অবস্থায় আমি দিনটে বাইরেই কাটাতুম,--তাতে আমার কোন দুঃখ ছিল না, কেননা তখন বসন্তকাল। প্ৰাণের স্পর্শে জড়াজগৎ যেন হঠাৎ শিহরিত পুলকিত উত্তেজিত হয়ে উঠেছিল। এই সঞ্জীবিত সন্দীপিত প্ৰকৃতির ঐশ্বর্ষের ও সৌন্দর্যের কোন সীমা ছিল না। মাথার উপরে সোণার আকাশ, পায়ের নীচে সবুজ মখমলের গালিচা, চােখের সুমুখে হীরেকষের সমুদ্র, আর ডাইনে বঁায়ে শুধু ফুলের জহরৎ-খচিত গাছপালা,-সে পুষ্পরত্বের কোনটি বা সাদা, কোনটি বা লাল, কোনটি বা গোলাপী, কোনটি বা বেগুনি । বিলেতে দেখেচ বসােন্তর রং শুধু জল-স্থল-আকাশের নয়, বাতাসের গায়েও ধরে। প্রকৃতির রূপে অঙ্গসৌষ্ঠবের, রেখার-সুষমার যে অভাব আছে, তা সে এই রঙের বাহারে পুষিয়ে নেয়। এই খোলা আকাশের মধ্যে এই রঙীন প্ৰকৃতির সঙ্গে আমি দুদিনেই ভাব করে নিলুম। তাঁর সঙ্গই আমার পক্ষে যথেষ্ট ছিল, মুহূর্তের জন্য কোন মানব সঙ্গীর অভাব বােধ করিনি। তিন চার দিন বােধ হয় আমি কোন মানুষের সঙ্গে একটি কথাও কইনি, কেননা সেখানে আমি জনপ্রাণীকেও চিনতুম না, আর কারও সঙ্গে গায়ে পড়ে उथळां° कष्ट्र उठांभांद्र क्षऊ छिल नl । তারপর একদিন রাত্তিরে ডিনার খেতে যাচ্ছি, এমন সময় বারাণ্ডায় কে একজন আমাকে Good evening বলে সম্বোধন করলে। আমি তাকিয়ে দেখি সুমুখে একটি ভদ্রমহিলা পথ জুড়ে দাঁড়িয়ে আছেন। * বয়েস পঞ্চাশের কম নয়, তার উপর তিনি যেমন লম্বা, তেমনি চওড়া। সেই সঙ্গে নজরে পড়ল যে, তার পরণে চকচকে কালো সাটিনের পোষাক, আঙ্গুলে রঙ-বেরঙের নানা আকারের পাথরের আংটি। বুঝলুম যে এর আর যে-বস্তুরই অভাব থাক, পয়সার অভাব নেই।