পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার-ইয়ারী-কথা br盤 টুকরো টুকরো হয়ে গেছে—আমনি আমি তোমার কাছে চলে এসেছি । --তাহলে এখন তুমি-? --পরলোকে । এর পর টেলিফোন ছেড়ে দিয়ে আমি ঘরে চলে এলুম। মুঠতে আমার শরীর মন একটা অস্বাভাবিক তন্দ্ৰায় আচ্ছন্ন হয়ে এল। আমি শোবামাত্র ঘুমে অজ্ঞান হয়ে পড়লুম । তার পরদিন সকালে চোখ খুলে দেখি বেলা দশটা বেজে গেছে ।

  1. 张 §

কথা শেষ করে বন্ধুদের দিকে চেয়ে দেখি, রূপকথা শোনালার সময় ছোট ছেলেদের মুখের যেমন ভাব হয়, সীতােশর মুখে ঠিক সেই ভাল । সোমনাথের মুখ কাঠের মত শক্ত হয়ে গেছে। বুঝলুম তিনি নিজের মনের উদ্বেগ জোর করে চেপে রাখছেন। আর সেনের চােখ দুলে আসছে-ঘুমে কি ভাবে, বলা কঠিন। কেউ ‘ই’ ‘না”-ও করলেন না। মিনিট খানেক পরে বাইরে গির্জের ঘণ্টায় বারোটা বাজালে, আমরা সকলে এক সঙ্গে উঠে পড়ে ‘boy’ ‘boy’ বলে চীৎকার করলুম, কেউ সাড়া দিলে না। ঘরে ঢুকে দেখি, চাকারগুলো সব মেজেতে বসে দেয়ালে ঠেস দিয়ে ঘুমাচ্ছে। চাকারগুলোকে টেনে তুলে গাড়ী জুতিতে বলতে নীচে পাঠিয়ে দিলুম। হঠাৎ সীতেশ বলে উঠলেন, “দেখ রায়, তুমি একজন লেখক, দেখ, এ সব গল্প যেন কাগজে ছাপিয়ে দিয়ে না, তাহলে আমি আর ভদ্রসমাজে মুখ দেখাতে পারব না।” আমি উত্তর করলুম “সে লোভ আমি সম্বরণ করতে পারব না-তাতে তোমরা আমার উপর খুসিই হও, আর রাগই কর।” সেন বল্লেন, “আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি যা বল্লম তা আগাগোড়া সত্য, কিন্তু সকলে ভাববে যে তা আগাগোড়া বানান।” সোমনাথ বল্লেন, “আমারও কোনও আপত্তি নেই, আমি যা বল্লুম তা আগাগোড়া বানান, কিন্তু লোকে ভাবৰে যে তা আগাগোড়া সত্যি।”