পাতা:গল্পসল্প - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পসল্প

কালো কুমড়ে টাটকা লঙ্কা
দেখিয়ে দেব লবোডঙ্কা।

 আসানসোলে গাড়ি এসে থামল, বুড়ো মানুষটি নেবে গেলেন, সেখানে স্নান করে নেবেন। স্নান সেরে গাড়িতে ফিরতেই বিচকুন বললে, এ গাড়িতে থাকবেন না মশায়!

 কেন বলো তো।

 ভারি ইঁদুরের উৎপাত।

 ইদুরের? সে কী কথা!

 দেখুন-না আপনার ঐ হাঁড়ির মধ্যে ঢুকে কী কাণ্ড করেছিল।

 ভদ্রলোক দেখলেন তাঁর যে হাঁড়িতে কদম ছিল সে হাড়ি ফাঁকা, আর যেটাতে ছিল খইচুর তার একটা দানাও বাকি নেই।

 বিচকুন বললে, আর আপনার ন্যাকড়াতে কী একটা বাঁধা ছিল সেটা শুদ্ধ নিয়ে দৌড় দিয়েছে।

 সেটাতে ছিল ওঁর বাগানের গুটি-পাঁচেক পাকা আম।

 ভদ্রলোক একটু হেসে বললেন, আহা, ইঁদুরের অত্যন্ত ক্ষিদে পেয়েছে দেখছি।

 বিচকুন বললে, না না, ও জাতটাই ওরকম, ক্ষিদে না পেলেও খায়।

 ছেলেগুলো চীৎকার করে হেসে উঠল; বললে, হাঁ মশায়, আরো থাকলে আরো খেত।

 ভদ্রলোক বললেন, ভুল হয়েছে, গাড়িতে এত ইঁদুর একসঙ্গে যাবে জানলে আরো কিছু আনতুম।

 এত উৎপাতেও বুড়ে রাগ করলে না দেখে ছেলেরা দমে গেল— রাগলে মজা হত।

১০৪