কসাই সে কথায় রাজি হয়ে ঘোড়াটাকে কেটে তার মাথাটা বট গাছে ঝুলিয়ে রাখ্ল।
তারপর হাঁসের পাল নিয়ে কানাইএর সঙ্গে মেনকা মাঠে যাচ্ছে। যেতে যেতে সেই বটগাছের নীচে সে থাম্ল। থেমে বল্ল, ‘মাদারি, মাদারি, কি কর্ছ?”
মাদারির মাথাটা অমনি বল্ল “রাজার মেয়ে, আমি তোমার জন্য কাঁদ্ছি।”
মাঠে গিয়ে হাঁসগুলো ছেড়ে দিয়ে মেনকা চুল বাঁধ্তে বস্ল। তার চুল ছিল কাল কুচ কুচে, আর চমৎকার ঢেউখেলান। সে চুল মেনকা খুল্তেই তার পায়ে এসে ঝুলে পড়্ল। কাণাই তা দেখে ছুটে এসে বল্ল, “বাঃ কি চমৎকার চুল! দেখি না কত লম্বা।” এই ব’লে সে মেনকার কোঁকড়া চুলগুলি ধ’রে, টেনে লম্বা করূতে লাগ্ল। তখন মেনকা বাতাসকে ডেকে বল্ল, “বাতাস বাতাস, কানাইএর পাগড়ী উড়িয়ে নাও ত। কানাই বড় দুষ্টুমি কর্ছে।” অমনি হু হু করে কোথা থেকে বাতাস এসে কানাইএর মাথার পাগড়ী উড়িয়ে নিয়ে গেল। আর কানাই তাতে ভারি ব্যস্ত হয়ে পাগড়ী আন্তে ছুটল। তার পর পাগড়ী নিয়ে যখন সে ফিরে এসেছে, ততক্ষণে মেনকার চুলও বাঁধা হয়ে গিয়েছে।
এমনি ক’রে, রোজ মাঠে যাবার সময় মেনকা বটগাছের নীচে দাঁড়িয়ে বলে, “মাদারি, মাদারি কি কর্ছ?”
মাদারির গলা বলে, “রাজার মেয়ে, আমি তোমার জন্য কাঁদ্ছি।”