দরজায় ধাক্কা দিল। তাদের মা বল্লেন, “যাওত মালতী, দেখত কে বুঝি দরজা ঠেল্ছে।” তারা মনে করল হয়ত কোনও গরীব লোক বনে কাঠ কাট্তে এসেছিল বৃষ্টির জন্য বাড়ী যেতে পারেনি। মালতী তাড়াতাড়ি দরজা খুল্তে গেল। যেই সে দরজা খুলেছে অমনি এক প্রকাণ্ড কাল ভাল্লুক থপ্ থপ্ করে এসে ঘরে ঢুকেছে। সর্ব্বনাশ! কি হবে? মালতীও ভয়ে চীৎকার করে ছুটে তার মার পিছনে গিয়ে লুকল, আর পারুল গিয়ে বিছানার নীচে ঢুক্ল। তার মাও আগে খুব ভয় পেয়েছিলেন, কিন্তু ভাল্লুকটা বল্ল, “তোমাদের কোন ভয় নেই, আমি তোমাদের কিছু বল্ব না। বাইরে বৃষ্টিতে ভিজে আমার বড় শীত কর্ছিল, তাই দরজা ঠেলছিলাম।” সত্যি সত্যিই বেচারীর সমস্ত লোম একেবারে ভিজে গিয়েছে আর সে শীতে ঠক্ ঠক্ করে কাঁপছে। তা দেখে মালতী আর পারুল তাড়াতাড়ি এসে গামছা দিয়ে তার গা মুছিয়ে দিল। তাতে ভাল্লুক খুব আরাম পেয়ে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়্ল!
সে রাত্রে সেই ঝড় বৃষ্টিতে ভাল্লুক আর কোথায় যাবে? সে তাদের ঘরেই শুয়ে রইল। পরদিন ভোর হ’তেই সে বনে চলে গেল।
তারপর থেকে রোজ সন্ধ্যার সময় সেই ভাল্লুক তাদের বাড়ী আসে। ক্রমে মালতী পারুলের সঙ্গে তার খুব ভাব হয়ে গেল। তারা তার লোম ধ’রে টানে, কান ম’লে দেয়, পিঠের উপর চড়ে। সে তাদের কিছু বলে না।