পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯২
গল্প-দশক।

মাতা তাঁহাদের অধিক বয়সের সমস্ত চিন্তাভার এই ক্ষুদ্র শিশুর মাথার উপরে চাপাইয়া দিয়া গেছেন।

 দিদির যত্নে ও সেবায় নীলমণি তাহার বিপদের কাল উত্তীর্ণ হইয়া ছয় বৎসরে পা দিল।

 কার্ত্তিকমাসে ভাইফোঁটার দিনে নূতন জামা, চাদর এবং একখানি লালপেড়ে ধুতি পরাইয়া বাবু সাজাইয়া নীলমণিকে শশি ভাইফোঁটা দিয়েছেন এমন সময়ে পূর্ব্বোক্ত স্পষ্টভাষিণী প্রতিবেশিনী তারা আসিয়া কথায় কথায় শশির সহিত ঝগড়া বাধাইয়া দিল।

 সে কহিল, গোপনে ভাইয়ের সর্ব্বনাশ করিয়া ঘটা করিয়া ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিবার কোন ফল নাই।

 শুনিয়া শশি বিস্ময়ে ক্রোধে বেদনায় বজ্রাহত হইল। অবশেষে শুনিতে পাইল, তাহার স্বামী স্ত্রীতে পরামর্শ করিয়া নাবালক নীলমণির সম্পত্তি খাজনার গায়ে নিলাম করাইয়া তাহার স্বামীর পিস্‌তুতো ভাইয়ের নামে বেনামী করিয়া কিনিতেছে।

 শুনিয়া শশি অভিশাপ দিল, যাহারা এতবড় মিথ্যা কথা রটনা করিতে পারে তাহাদের মুখে কুষ্ঠ হউক্‌।

 এই বলিয়া সরোদনে স্বামীর নিকট উপস্থিত হইয়া জনশ্রুতির কথা তাহাকে জানাইল।

 জয়গোপাল কহিল আজকালকার দিনে কাহাকেও বিশ্বাস করিবার যো নাই। উপেন আমার আপন পিস্‌তুতো ভাই,